মো. আবদুল্লাহ, শেকৃবি

  ২৭ মে, ২০২৪

ভিসি বাবা বাছাই বোর্ডের সভাপতি নিয়োগ পেলেন ছেলে

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ বাছাই বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে থেকে নিজ ছেলেকে চাকরি দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া। উপাচার্যের ছেলের নাম হামিম আল রশীদ। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করেছেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির মেরিন, ফিশারিজ অ্যান্ড ওশানোলজি বিভাগে কর্মরত আছেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০১০ সালে উপাচার্যের বড় ছেলে আসাদুল্লাহ হিল কাফি এবং ২০১৩ সালে ভাগ্নি সাজিয়া আফরিন নিয়োগ পান। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সেকশন অফিসার পদে ৭ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন। সেই নিয়োগ বাছাই বোর্ডে উপাচার্য সভাপতির দায়িত্বে থেকে নিজ ছোট ছেলে হামিম আল রশীদকে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেন। এর মাধ্যমে শেকৃবি উপাচার্য আত্মীয়করণ, স্বেচ্ছাচারিতা ও সরকারি নিয়োগ বিধি লঙ্ঘনের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

উপাচার্য বাবার প্রভাবে চাকরি পাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্র জানায়, সরকারি নিয়োগবিধি অনুযায়ী নিয়োগ ও বাছাই বোর্ডের কোনো সদস্যের নিকটাত্মীয় চাকরির প্রার্থী হিসেবে আবেদন করলে সেই বাছাই বোর্ডে সদস্য হিসেবে তার থাকার কোনো সুযোগ নেই। এই ক্ষেত্রে এ বাছাই বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে থেকে কারোর কাছের আত্মীয় বা পোষ্য প্রার্থী হিসেবে আবেদন করলে তিনি পূর্বেই এই সম্পর্কিত তথ্য ঘোষণা করে নিয়োগ বাছাই বোর্ডের সব প্রক্রিয়া থেকে সরে যাবেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগ) অধ্যাপক ড. হাসিনা খান বলেন, ছেলে প্রার্থী হিসেবে আবেদন করা সত্ত্বেও উপাচার্যের নিয়োগ বাছাই বোর্ডের সভাপতির পদে থাকা ঠিক হয়নি।

নিকটস্থ আত্মীয় প্রার্থী থাকলে নিয়োগ বাছাই বোর্ডে থাকা উচিত নয়, এটা তিনি (উপাচার্য) ঠিক করেননি।

উপাচার্যের সভাপতি থাকার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলেন, সেকশন অফিসার পদে উপাচার্য বাছাই বোর্ডের সভাপতি হিসেবে ছিলেন। কিন্তু তার ছেলের পরীক্ষার দিন তিনি সভাপতি ছিলেন না। ওই দিন সভাপতি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. অলক কুমার পাল।

বিশ্ববিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, পুরো সেকশন অফিসার পদে ভাইভা নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ছিলেন উপাচার্য। উপাচার্যের নির্দেশনা অনুযায়ী এই পদে সিলেকশন করা হয়েছে।

ছেলে হামীমের নিয়োগের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ওর নিয়োগ বোর্ডে আমি ছিলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সেখানে ছিলেন। কাজেই স্বজনপ্রীতির অভিযোগ যথাযথ না। যারা ভিসি হতে চান এবং যারা আমার কারণে অনিয়ম-দুর্নীতি করতে পারেননি, তারাই এসব বলে বেড়াচ্ছেন, এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।

গত ১৬ মে উপাচার্যের প্রভাবে এই নিয়োগ, টেন্ডার, একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রাপ্ত অভিযোগের দফাওয়ারি বক্তব্য ৫ কর্মদিবসের মধ্যে কমিশন বরাবরে পেশ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে পত্র পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। প্রসঙ্গত, ইউজিসির কাছে পাঠানো অভিযোগপত্রে বাবার সভাপতিত্বে ছেলের চাকরি বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close