শাদমান হাফিজ শুভ, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)

  ২৫ মে, ২০২৪

জয়পুরহাটে এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে প্রবাসী সামিউল নাসিম সোনার বিরুদ্ধে যশোরের শফিকুল ইসলামের ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা এবং ফরিদপুর জেলার রাকিব হোসেনের ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ প্রতারণার ঘটনায় ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এবং আক্কেলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এই প্রবাসীর মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করেন। টাকার বিষয়ে সোনার মায়ের কাছে এসে প্রতিকার না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দারস্থ হতে হয়েছে শফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারকে এবং মিথ্যা মামলায় হয়রানির হুমকি পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে ভুক্তভোগী রাকিব হোসেনকে। প্রবাসী সামিউল নাসিম সোনার সঙ্গে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলামের ও রাকিব হোসেনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। চীন থেকে পণ্য দেওয়ার আশ^াস দিয়ে পণ্য না দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই দুই ভুক্তভোগী। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত সামিউল নাসিম সোনা ফেসবুকে পরিচয় দেন নাসিম ওভারসিস গ্রুপের মালিক হিসেবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে অর্থবছরে সামিউল নাসিম সোনার ব্যবসার ধরন সরবরাহকারী দেখিয়ে একক মালিকানায় নাছিম করপোরেশন নামীয় একটি ই-ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া রয়েছে। ২০২২ সালে অভিযুক্ত সোনার মা স্যানেটারি ইন্সপেক্ট শামছুন নাহারের বিরুদ্ধে উপঢৌকন না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়াসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। অনেক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত সোনার বাবা আবু নাছিম মো. ফরহাদের বিষয়ে। তবে উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের নিজ গ্রাম জাফরপুরে রয়েছে ।

শফিকুল ইসলামের লিখিত অভিযোগে দেখা যায়, এই বছরের ১৬ মে পণ্য ক্রয়ের জন্য অভিযুক্ত সোনা সিটি ব্যাংকের ঢাকা গুলশান শাখায় নাসিম করপোরেশন নামের হিসাব নম্বরে ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা জমা নেন। তারপরেই যোগাযোগের সব মাধ্যম থেকে ভুক্তভোগী শফিকুলের সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। অন্যদিকে আরেক ভুক্তভোগী রাকিব হোসেনের থানায় করা লিখিত অভিযোগে দেখা যায়, তার সঙ্গেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করে কয়েক দফায় টাকা নেন। পরে ভুক্তভোগীর ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তার সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি আমার পাওনা টাকার বিষয়ে সোনার বাড়িতে গিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তার মা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবেন বলে ১০০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্পে লিখিত এবং একটি চেক দিয়েছেন।

অন্য ভুক্তভোগী রাকিব হোসেন বলেন, অভিযুক্ত সোনা ব্যবসার কথা বলে এবং ধার নেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। টাকাগুলো নেওয়ার জন্য তার মায়ের কাছে গেলে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন। পরে টাকা না পেয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। বর্তমানে আমিও প্রবাসে আছি। তিনি এমন প্রতারণা আরো অনেকের সঙ্গে করেছেন। এসব বিষয়ে অভিযুক্ত সোনার মা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সামছুন নাহার মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীদের। সামিউল নাসিম সোনা বিদেশে অবস্থান করায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

থানার ওসি নয়ন হোসেন বলেন, তাদের বিষয়ে আগের ওসি থাকাকালীন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। অভিযুক্ত দেশে না থাকায় তেমন অগ্রগতি করা যায়নি, তারপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলম বলেন, টাকা আত্মসাতের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকাগুলো ফেরত দেবেন মর্মে অভিযুক্তের মা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close