গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ২০ জানুয়ারি, ২০২৪

সিরাজগঞ্জ

বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর তিন কিমি দৃশ্যমান, কাজে ৭৫০০ কর্মী

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ওপর এখন দৃশ্যমান হচ্ছে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। রাজধানীর সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্ত সূচিত হওয়ার লক্ষ্যে দ্রুত চলছে কাজ। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে দেশের সর্ববৃহৎ এই রেলওয়ে স্থাপনাটির ইতোমধ্যে ৩ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার দৃশ্যমান।

জানা যায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেতুটিতে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে বলে রেলওয়ে সূত্র থেকে জানা গেছে।

আরো জানা যায়, সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেনচার। টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর প্রান্তে সেতুর ২৪ থেকে ৫০ নম্বর পিলার পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেনচার। সিরাজগঞ্জ প্রান্তে ২৩ থেকে ১ নম্বর পিলার পর্যন্ত সেতুর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছেন তারা। এছাড়া সেতুর উভয়প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কর্মী নিয়োজিত আছে। সেতুতে ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে ৪৩টি পিলার স্থাপন হয়েছে। বাকি ৭টি পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। ৩১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এতে সেতুর ৩ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার দৃশ্যমান। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৮৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৭০ দশমিক ২৮ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের ৩৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

তানভীরুল ইসলাম আরো জানান, প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পের কাজ সব মিলিয়ে ৭৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজ আগস্টেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু অপর প্যাকেজটির কিছু কাজ বাকি থাকবে। চুক্তির মেয়াদ ৩ থেকে ৪ মাস বাড়াতে হতে পারে। তবে আমরা অফিসিয়ালি অনুমোদন করিনি। এগুলো অ্যাসেসমেন্ট করছি। সব

মিলিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আমাদের ডিপিপির মেয়াদ ২০২৫ পর্যন্ত আছে। কিন্তু ডব্লিউডি-২ প্যাকেজ কিছুটা পিছিয়ে আছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close