ফেনী ও সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
ফেনী ও সিরাজগঞ্জ
হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগী ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ ভর্তি
ওয়ার্ডের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় বারান্দার মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে অতিরিক্ত রোগী ও স্বজনদের * ফেনী জেনারেল হাসপাতালে তিন চিকিৎসক দিয়ে এত রোগীর চাপ সামলানো কঠিন * সিরাজগঞ্জে নানা বয়সি নারী-পুরুষরাও ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত
ফেনী ও সিরাজগঞ্জে বেড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। একইসঙ্গে নানা বয়সী নারী-পুরুষ সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালের জায়গা হচ্ছে না রোগীর, বারান্দার মেঝেতে চলছে চিকিৎসা।
শীত বাড়ার সঙ্গে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বেড়েছে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী। তিনজন চিকিৎসক দিয়ে এতো রোগীর চাপ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে হাসপাতালের শিশু বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়ার্ডের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় বারান্দার মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে অতিরিক্ত রোগী ও স্বজনদের।
ফেনী জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশু ওয়ার্ডে ২৬ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিল ৫৩ জন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৭ বেডের বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৪৮ শিশু। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে এতো রোগীর চাপ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমাইয়া খাতুন বলেন, প্রতিদিন ঠান্ডাজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা এখানে ভর্তি হচ্ছে। বেড সংকটে হাসপাতালের ফ্লোর ও বারান্দায় বিছানা পেতে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে।
বিবি আয়েশা নামে এক শিশু রোগীর অভিভাবক বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের ফ্লোরে থাকতে হচ্ছে শিশু রোগীদের। ফলে সুস্থ হওয়ার বদলে আরও বেশি সংক্রমিত হচ্ছে শিশুরা।
হাসপাতালের শিশু বিভাগে দায়িত্বরত নার্স শ্যামলী রাণী বলেন, কয়েকদিন ধরে রোগীর চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। এতো রোগীর চাপ সামাল দেওয়া আমাদের পক্ষে কষ্ট হচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আরএমও ডা. মো. আসিফ ইকবাল বলেন, হাসপাতাল পরিচালনা করার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসক এখানে নেই। চিকিৎসক সংকটের কারণে সেবা কার্যক্রমে বেগ পেতে হচ্ছে।
এদিকে সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলায় বিভিন্ন হাসপাতালে ঠান্ডায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুন। শিশুরা ডাইরিয়া, নিউমনিয়া, সর্দি-কাঁশি, জ্বর সহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে অভিভাবকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন চিকিৎসার পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকতে হবে।
ঠান্ডাজনিত রোগে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। হঠাৎ করে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়া শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছে বাবা-মায়েরা। এদিকে শিশুদের পাশাপাশি নানা বয়সী নারী-পুরুষরাও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
হাসপাতালে ভর্তি এক শিশুর বাবা আব্দুল হালিম বলেন, হঠাৎ করে ঠান্ডা বেশি পড়ায় আমার বাচ্চার ডায়রিয়া শুরু হয়। পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক রতন কুমার রায় জানান, গত ১ সপ্তাহে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ঠান্ডা রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। তিনি এ ব্যাপারে শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওনোর পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।
"