কনক দেব, শিবগঞ্জ (বগুড়া)

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

বগুড়া

শিবগঞ্জে প্রথম জিরা চাষ

কোনো ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা না এলে এক মাসের মধ্যে জিরা সংগ্রহ করা যাবে বলে আশ্বাস

দেশে যে পরিমাণ জিরার চাহিদা তার সম্পূর্ণটাই আমদানিনির্ভর। অবশেষে বগুড়ার শিবগঞ্জে মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ দেশে কৃষকপর্যায়ে চাষাবাদের উপযোগী জিরার জাত আবিষ্কার হয়েছে। বারি জিরা-১ নামে জিরার জাতটি জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক ২০২২ সালে অনুমোদিত হয়।

জানা গেছে, দেশে প্রতি বছর জিরার চাহিদা থাকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। বারি জিরা-১ জাতের জিরার গাছ লম্বা ও ঝোপালো। উচ্চতা ৪০-৫০ সেন্টিমিটার। গাছের পাতার রং গাঢ় সবুজ। ফুলের রং গোলাপী। কৃষক পর্যায়ে চাষ উপযোগী এ জাতের জিরার জীবনকাল ১০০-১১০ দিন। এ জাতের জিরা বাজারে প্রাপ্ত জিরা অপেক্ষা অধিক সুগন্ধি। এ জাতের জিরার হেক্টর প্রতি ফলন ৫৫০-৬০০ কেজি। সরেজমিনে উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কৃষক পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ হচ্ছে জিরা।

কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের সহায়তায় প্রদর্শনীর মাধ্যমে ২৫০ গ্রাম জিরার বীজ পাই। সেই বীজ দিয়ে ১০ শতক জমিতে জিরার চাষ করছি। নভেম্বার মাসের প্রথম সপ্তাহে জিরার জমি তৈরি করে বীজ বপন করি। এখন আমার জিরার গাছে ফুল চলে আসছে।

উপজেলা সদরের কৃষক মো. হাবিবুল হুদা শাওন জানায়, কৃষি অফিসের সহায়তায় স্বল্প পরিসরে এবার প্রথম জিরার চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ভালো আছে ফসল। তবে এ ফসলের যত্ন একটু বেশি করতে হচ্ছে।

উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের রহবল ব্লকে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, জিরা একটি অতি মূল্যবান এবং চ্যালেঞ্জিং মসলা জাতীয় ফসল। গত বছর থেকে জিরার চাষাবাদ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। জিরা ফসলের রোগবালাই অন্যান্য মসলা জাতীয় ফসলের তুলনায় একটু বেশি হয়ে থাকে। এ জন্য জিরা চাষে নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন। জিরার রোগবালাইয়ের আক্রমণ প্রতিরোধে সিডিউল অনুযায়ী বালাইনাশক স্প্রে করতে হয়। এখন পর্যন্ত আমার ব্লকে চাষকৃত জিরার অবস্থা বেশ ভালো। প্রতিটি গাছে ফুল ফল চলে এসেছে। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা না আসলে অগামী এক মাসের মধ্যে জিরা সংগ্রহ করা যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আল মুজাহিদ সরকার বলেন, শিবগঞ্জে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী আকারে জিরার চাষাবাদ হচ্ছে। জিরার চাষাবাদ এ বছর স্বল্প পরিসরে হলেও আমাদের বাস্তবায়িত প্রদর্শনী থেকে উৎপাদিত জিরা বীজ হিসেবে ব্যবহার করে আগামী মৌসুমে এর আবাদ এলাকা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close