মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

কামারশিল্প বাঁচিয়ে রেখেছে কয়েকটি পরিবার

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় কামারশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। একসময় উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের কামাড় পাড়ায় পাড়ার কাছাকাছি পৌঁছাতেই কানে আসে লোহা পেটানোর টাং টুং শব্দ ভেসে আসত। অনলাইনসহ বিভিন্ন আধুনিকতায় এখন আর সেই রকম শব্দ বেশি শোনা যায় না। হাতে গোনা

কয়েকটি পরিবার এই পেশাকে ধরে রেখে জীবিকা নির্বাহ করছেন। মঠবাড়িয়া পৌর শহরের কামারপাড়ায় বর্তমানে মাত্র ৮ জন এ পেশায় জড়িত রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কর্মকার ও তাদের কারিগর তারা লোহা পিটানো, গলানো, ধারালো করা, আল কাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ করছেন। কয়লা প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে একটি মাল তৈরি করে ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সবাই আলাদা আলাদা কাজ করেন। তারা ধীরে ধীরে কাঁচা লোহা গরম করেন। সেটি থেকে মালামাল বানানোর কাঠামো তৈরি, তারপর গৃহস্থালি বঁটি, খুন্তি, পাছুন, কৃষকের কাস্তে, নিড়ানি, খুন্তি, কোদাল, লাঙলের ফলা, শ্রমিকের কুঠার, শাবল, দা, বটি, বড় চাকু ইত্যাদি তৈরি করা, ধারালো করা, ও সব শেষে বিক্রি উপযুক্ত করেন।

কামার পাড়ায় সুশীল কর্মকার জানান, প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুম ও কুরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে দোকানে ৫-৬ জন কারিগর কাজ করেন। তাদের বেতন মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কর্মচারীদের সঙ্গে তিনি নিজেও কাজ করেন। তবে তিনি তার পরের প্রজন্মকে এই পেশা থেকে দূরে রাখছেন। এক সময় লাখ টাকার কাজও করেছি। আবার ৪০ হাজার টাকার কাজ করলে শ্রমিকদের বেতন, কয়লার খরচ দিয়ে ২০-২৫ হাজার টাকা থাকতো। কিন্তু এখন আর আগের অবস্থা নেই। কয়লার দাম অনেক বেশি। মানুষ অনলাইনে সব কিছু অর্ডার দিয়ে কিনে ফেলে।

রবিন কর্মকার আক্ষেপ করে বলেন, বছরের পর বছর এ শিল্প নিয়ে কাজ করলেও তারা কোনো ব্যাংক ঋণ সুবিধা পান না। সব সময় ঋণ লাগে না। কিন্তু যখন ঋণ প্রয়োজন হয়, তখন চড়া সুদে এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়। আর সে ঋণ পরিশোধ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তিন পুরুষ ধরে আমরা এই কাজ করছি। আমাদের দোকানের বয়স ৭০ বছর। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমাদের পুঁজি বলতে কিছুই নেই।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাইয়ূম বলেন, কামর শিল্প দেশের অর্থনৈতকি একটা অংশ। ওনাদের সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close