জয়দেব চক্রবর্তী, কেশবপুর (যশোর)

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

খাল ভরাট, সহস্রাধিক বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত

যশোরের কেশবপুরে পানি নিষ্কাশনের খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিলের ভেতরে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে গরালিয়া বিলসহ একাধিক ছোট মৎস্য ঘেরের হাজারের অধিক বিঘা জমি বোরোর আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মৎস্য ঘেরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিলের ভিতর পানি নিষ্কাশনের খালটি পুনঃখননের দাবি জানিয়েছেন বিল পাড়ের মানুষ।

জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন, পাঁজিয়া ও মঙ্গলকোট ইউনিয়নের গ্রামসমূহ নিয়ে গরালিয়া বিল। এই বিলের সঙ্গে ব্যাসডাঙ্গা, পাঁচবাকাবর্শি, রাজনগর বাঁকাবর্শি মাগুরাডাঙ্গা, খতিয়াখালি, সুজাপুর বড়েঙ্গা, কনন্দপর্পুর, মাগুরখালি বিলের অধিবাসীরা গরালিয়া বিলের সুবিধা ভোগী। দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে ঘের ব্যবসায়ীরদের মাছের চাষের কারণে। বর্ষা মৌসুমে ঘেরে ৬ মাসের জন্য লীজ নিয়ে মাছের চাষ করে থাকে। এবং বোরো ধানের মৌসুমে ধানের চাষ করে থাকে বিল পাড়ের কৃষকরা। ডিসেম্বরের শেষের দিকে ঘেরের পানি সেচ দিয়ে খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শ্রীহরি নদীতে পড়ে থাকে। ঘের মালিকরা সেচ দিয়ে বোরোধান মৌসুমে চাষের উপযোগী করে দিয়ে আসছিলো। গরালিয়া বিলে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যাসডাঙ্গা বিলের সেতু হতে বড়েঙ্গা বিলের স্লুইসগেট পযর্ন্ত দীর্ঘ একটি খাল খনন করা হয়েছিলো ৮০ এর দশকে। কিন্তু দীর্ঘবছর বিলের পানি সেচের মাধ্যমে নিষ্কাশনের কারণে খালের তলদেশে পলি জমে পড়েছে। এতে বিলের চেয়ে খালের তলদেশে উঁচু হয়ে দীর্ঘদিনের মরা খালে পরিনত হয়ে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। যার কারণে মৎস ঘেরের পানি নিষ্কাশনের কোনো সুযোগ পাচ্ছে না ঘের মালিকরা। এ কারণে বিল সমূহে বোরোধান আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল হক, মাগুরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ৬ মাস চুক্তিতে জমি লিজ দিয়েছি। বোরোধান মৌসুমে ধানের চাষ করে এক সঙ্গে সারা বছরের খাবারের ব্যবস্থা হয়ে থাকে। তাছাড়া ধানের বিচলী, পল, নাড়া সংরক্ষণ করে বাড়িতে বাড়িতে গবাদিপশু পালন করে থাকি। ঘেরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হওয়ায় বোরোধান আবাদ অনিশ্চিত হয়ে গবাদিপশু পালনও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারের সহযোগিতায় বিলের খালটি যদি পুনঃরখনন করা হয় তাহলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

বিশিষ্ট মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বিলের পানি নিষ্কাশনের খাল ভরাট হয়ে গেছে। এতে খালে বিলের পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। ঘেরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। বিলের পানি সেচের মাধ্যমে খালে ফেলার পরে অনেক স্থান থেকে ভেড়ি ছুটে যেয়ে আবার প¬াবিত হয়ে যায়। তার পরেও আমরা বড়েঙ্গা স্লুইস গেটে স্থায়ী ভাবে দীর্ঘ মেয়াদি পাওয়ার পাম্পের সাহায্যে বিলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে তার সুফল পেতে আরো এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর থেকে আর ঘেরের পানি নিষ্কাশনের কোনো সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান।

কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা (ইউএনও) মো. তুহিন হোসেন বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য মাছের ঘের মালিক দের দ্রুত সেচ

দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। খাল পুনঃ খননের জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close