নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ মে, ২০২৪

কাঁচামরিচে ডাবল সেঞ্চুরি চড়া দাম ডিম-আলুর

দেশের বাজারে দাম বাড়তি হওয়ায় ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে কাঁচামরিচ। তবু দামে কোনো প্রভাব পড়ছে না। সপ্তাহখানেক আগেও কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সেটির দাম বেড়ে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছে। শুধু কাঁচামরিচ নয়, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি, ডিম ও মাংস। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, মগবাজার, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দেখা গেছে, বাজারে কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে যেসব মরিচের মান কিছুটা ভালো, সেই দু-এক জাতের মরিচ ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার হিলি বন্দর দিয়ে এক ট্রাকে ৯ হাজার ৮৪০ কেজি কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে। ৬ মাস বন্ধের পর আমদানি শুরু হওয়ায় দেশের বাজারে মরিচের দাম কমে আসবে বলে ভেবেছিলেন আমদানিকারকরা। কিন্তু আমদানির পর দুদিনের ব্যবধানে উল্টো বেড়েছে দাম।

আমদানিকারকরা জানান, হিলি বন্দর দিয়ে পুনরায় ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। সাধারণত ভারতের বিহার থেকে মরিচ আমদানি করা হয়, কিন্তু গতকালই আমদানির অনুমতি দেওয়ায় ভারতের ফুলবাড়ী অঞ্চল থেকে স্থানীয়ভাবে এক ট্রাক মরিচ আমদানি করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বিহারের মোকামগুলো থেকে আমদানি করা হবে। যে দামে ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে, তাতে দেশের বাজারে মরিচের দাম ১০০ টাকার মধ্যে থাকবে। তবে আমদানিতে কেজিপ্রতি শুল্ক দিতে হচ্ছে ৩৫ টাকা। শুল্ক কিছুটা কমানো হলে মানুষ আরো কম দামে কাঁচামরিচ কিনতে পারবে।

কৃষকরা বলছেন, তীব্র তাপপ্রবাহের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে কৃষিতেও। মরিচ গাছ ভালো হলেও অত্যধিক খরায় ফলন খুবই কম। অনাবৃষ্টির কারণে অনেক জমিতে মরিচের গাছও মরে যাচ্ছে। জমিতে সেচের মাধ্যমে পানি দিয়েও ফল ভালো পাচ্ছেন না। হাতেগোনা কিছুসংখ্যক কৃষক ফলন ভালো পেলেও অধিকাংশ কৃষকই পড়েছেন লোকসানের কবলে।

সবজির বাজারেও দেখা গেছে, প্রতিটি সবজির দাম চড়া। বাজারে এখন প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। কাঁকরোল ও বরবটির ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। পেঁপের কেজিও ৮০ টাকা। ধনেপাতা ২০০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আদা বা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকার কমে মিলছে না। আলুর কেজি গত সপ্তাহে ৫০ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ডিমের বাজারে দেখা গেছে, এক হালি ডিম ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা। আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সারা দেশে মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা (তেজগাঁও আড়ত মালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করেন। হুট করে দাম কমিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এরপর আবার দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা লুটে সিন্ডিকেট।

এদিকে বাজারে মুরগিও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ টাকা দরে। লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকায়। আর সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। অন্যদিকে গরুর মাংস আগের বাড়তি দামেই প্রতি কেজি ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, রুই মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০, বড় রুই ৪০০, পাঙাশ ২৩০, চিংড়ি আকারভেদে ৬০০ থেকে ৭৫০, পাবদা ৪০০, তেলাপিয়া ২২০, চাষের কই ২৮০, কাতল ৩৫০, গুলসা টেংরা প্রতি কেজি ৫৫০, টেংরা কেজিপ্রতি ৫৫০ থেকে ৬০০, প্রতি কেজি বড় শিং ৫৫০, ছোট শিং ৪০০, বড় বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ ও বড় বাগাড় মাছ ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close