‘আমার বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চাই। বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছে, তা তাকে দেখে বুঝতে চাই। একজন মানুষ মানুষকে এমনভাবে কী করে মারতে পারে। আমার বাবাকে কেটে কেটে টুকরো করা হয়েছে, আমি জীবনেও ভুলতে পারব না।’ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের বাড়ির সামনে গতকাল শুক্রবার তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।

ডরিন বলেন, ‘ওপরে যদি আল্লাহ থাকেন, তাহলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তিনি এর বিচার করবেন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য অনেক দিন ধরেই তারা পরিকল্পনা করেছে। তারা সাজিয়ে-গুছিয়ে নিয়েই এ ধরনের বড় একটা অপরাধ ঘটিয়েছে।’ সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান ডরিন। তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যার নাম আসছে, তাকে বিদেশ থেকে নিয়ে আসেন। কান টানলে মাথা আসবে, যদি তার ওপরের কেউ থেকে থাকে তার নামটিও খতিয়ে দেখেন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তদন্ত করে বিষয়টি দেখুন, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক যেটাই হোক না কেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।’

ডরিন বলেন, ‘আমার বাবার কালীগঞ্জে এতটাই জনপ্রিয়তা ছিল, তার জনপ্রিয়তা দেখেই তাকে আটকানোর জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে অপপ্রচার চালানো হয় এক সময়। পরবর্তী সময় এসব মামলা সব মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। তার প্রমাণও আমাদের কাছে আছে।’ ডরিন আরো বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, ‘ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে, ধৈর্য ধর আমি সঙ্গে আছি’।”

১২ মে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম চিকিৎসার জন্য দর্শনার গেদে বন্দর দিয়ে ভারতের কলকাতায় যান। ২২ মে আজিম নিহত হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। শুক্রবার বেলা ১১টায় তার মেয়ে ডরিন ঢাকা থেকে কালীগঞ্জের বাড়িতে এসে পৌঁছান। এ সময় আশপাশ থেকে নেতাকর্মীরা বাড়ির সামনে এসে উপস্থিত হন এবং ডরিনের সঙ্গে কথা বলেন।

আনোয়ারুল আজিমের বাল্যবন্ধু গোলাম রসুল বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি একটাইÑ যেকোনো মূল্যে শাহিনকে যদি ধরে এনে আইনের আওতায় আনা যায়, তাহলে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তৃণমূল পর্যন্ত কারা জড়িত আছে, সবকিছু বের হয়ে আসবে। গোলাম রসুল আরো বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে আনোয়ারুল আজিমের বিদেহী আত্মার জন্য এলাকার প্রতিটি মসজিদে দোয়া মাহফিল হয়েছে।

"