নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ জানুয়ারি, ২০২৪

হজ কোটার অর্ধেকও পূরণ হয়নি এবার

হতাশ হাব-আটাব নেতারা, ব্যবসায় ক্ষতির শঙ্কা

পবিত্র হজ পালনে এবার বাংলাদেশের জন্য কোটা বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার। হজে যাওয়ার জন্য দুই দফা সময় বাড়িয়ে নিবন্ধনের শেষ তারিখ ছিল গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত। তবে শেষ পর্যন্ত খালি থেকে গেল প্রায় ৮০ হাজার হজযাত্রীর কোটা। নিবন্ধনের সময়সীমা দুই দফা বাড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত সাড়া পায়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়। আগের বছরও কোটার বিপরীতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হজযাত্রী কম ছিল। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ বাংলাদেশির হজে যাওয়ার সুযোগ ছিল। তবে ওই কোটার বিপরীতে হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন ৪৭ হাজার ৭৭৩ জন। নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৭২ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ৪৪ হাজার ১ জন। তাতে কোটার বাকি রয়েছেন ৭৯ হাজার ৪২৫ জন। চলতি বছরে হজে যাওয়ার জন্য দেশে গত ১৫ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু হয় এবং সময় বেঁধে দেওয়া হয় ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নিবন্ধন কম হওয়ায় প্রথম দফায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ায় মন্ত্রণালয় এবং কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় ফের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কোটার অর্ধেকও পূরণ হয়নি।

এদিকে তৃতীয় দফায় নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর আলোচনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেটি করেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়। সময় আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম বলেন, চলতি বছর হজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সৌদি সরকার বারবার হজযাত্রীর সংখ্যা জানানোর অনুরোধ করে আসছে। তারা আর সময় দিতে চায়নি, তাই বাধ্য হয়ে সরকারও সময়সীমা বাড়াতে পারেনি। তাই প্রায় ৮০ হাজার কোটা পূরণ না হলেও হজ নিবন্ধন সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি জানান, সার্বিক পরিস্থিতিতে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আগামী রবিবার মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে।

এবার হজযাত্রী এত কম হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে হতাশ হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। হাব ও আটাবের নেতারা বলছেন, ‘সরকার নির্ধারিত হজ প্যাকেজের উচ্চমূল্যের কারণেই এবার অনেকে হজে যেতে আগ্রহ দেখাননি। হজযাত্রীর কোটা পূরণ না হওয়ার এর প্রভাব পড়বে তাদের ব্যবসায়।’ আটাব মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ বলেন, ‘হজ নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় এবার অনেক ট্রাভেল এজেন্সি আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি ও বেসরকারি যেকোনো ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করতে এবার প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হবে। হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে ১ বাংলাদেশিকে গড়ে ৭ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ করতে হবে। আর এমন উচ্চ খরচের কারণে অনেকে হজে যেতে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। সরকারিভাবে এবার হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ এবং বিশেষ প্যাকেজে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা খরচ পড়বে। বেসরকারিভাবে দুটি হজ প্যাকেজের মধ্যে সাধারণ প্যাকেজে খরচ ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ এবং বিশেষ প্যাকেজের খরচ ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা ধরা হয়েছে। চলতি বছর চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close