রায়হান আবিদ, বাকৃবি

  ০৯ জুন, ২০২৪

শোঁ শোঁ শব্দে উড়িয়ে দিলাম একদণ্ড ছেলেবেলা

একদিকে শোঁ শোঁ শব্দে ঘুড়ি আকাশে উড়ছে আর অন্যদিকে আবিরে মাখামাখি হয়ে অট্টহাসিতে মেতে উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইনফরমেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একদল তরুণ-তরুণী। শাড়ি-পাঞ্জাবিতে সেজে তারা বিভিন্ন আকার-আকৃতির ও রং-বেরঙের ঘুড়িতে রাঙালো ক্যাম্পাসের আকাশ। সবকিছু মিলে যেন তৈরি হলো এক মনোরম দৃশ্য। শুরুটা হয়েছিল ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার চাপ ও একঘেয়েমি কমাতে ভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা থেকে। টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এখানকার অ্যাকাডেমিক চাপে যেন ছাত্রদের এই বিশাল সুন্দর ক্যাম্পাসও কারাগার মনে হয়। সেই চাপের কারাগার থেকে মুক্তির সঙ্গে একটু আনন্দ-ফুর্তি করার মনের দাবি ‘ঘুরি উৎসব’।

বেলা যত যায় আয়োজন যেন আরো বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বেড়েছে উৎসবের আমেজ। ঘুরি ওড়ার শোঁ শোঁ শব্দ মনে করিয়ে দেয় পুরোনো গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। ঘুড়ি ওড়ানোর সময় মনে হচ্ছিল যেন সবাই ছেলেবেলায় ফিরে যাচ্ছি। আবার অনেকের জন্যই এটা ছিল তাদের ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথম এক্সপেরিয়েন্স। ঘুড়ি ওড়ানোর পর ছিল আবির খেলার আয়োজন। এদিকে সবাই আবির মাখাচ্ছিল একে অন্যকে, আবার অনেকে রঙের সঙ্গে তাদের হতাশাগুলোও উড়িয়ে দিচ্ছিল হাওয়ায়। ছবি তোলা ও গান-বাজনারও আয়োজন ছিল। রং মাখার পর ছিল বল নিক্ষেপ খেলার আয়োজন। যেখানে সঠিক নিশানায় লাগাতে পারলেই পয়েন্টের ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের জন্য ছিল বিশেষ পুরস্কার।

সবশেষে সবার চোখে মুখে যখন ক্লান্তির ছাপ, তখনই চলে আসে নাশতা ও ঠান্ডা পানীয়। সন্ধ্যায় শুরু হলো আরেকটি মজার খেলা। যেখানে প্রত্যেককে একটি করে টোকেন দেওয়া হয়। টোকেনগুলোতে ছিল বিভিন্ন সিনেমার নাম। আর যার ভাগ্যে যে টোকেন পরেছে, তাকে সিনেমার নাম মুখ দিয়ে না বলে অভিনয় করে বোঝাতে হয়েছিল। আর সবশেষে সবাই মিলে বসে শুরু করলাম গানের আসর। গানে জয়িতা আর মাঝহারুল ছিল গিটারে। আর বাকি সবাই সুরে সুর মিলিয়ে রাত ৮ পর্যন্ত গানের আসর উপভোগ করলাম। জীবনের ব্যস্ততা হয়তো থেকে যাবে কিন্তু মাঝের এই স্বল্প সময়গুলোই যেন সেই দীর্ঘ ব্যস্ততাগুলোকে সাময়িক অদৃশ্য করে রাখবে।

আয়োজনের সম্পূর্ণ ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করার দায়িত্ব ছিল সাজিদের। সাজিদ জানায়, বায়োইনফরমেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টে এই চাপটা যেন আরেকটু বেশি। কারণ একই সঙ্গে লাইফ সায়েন্সের টপিকগুলো গিলতে হয় আর প্রোগ্রামিং হজম করতে হয়। আর এই চাপ কমাতে ডিপার্টমেন্টের সিনিয়ররা যেন একেকজন দেবদূত। সুযোগ পেলেই নানা ধরনের আয়োজন করে, যেগুলো ক্যাম্পাসের অন্যরা কেউ সচরাচর করে না। মুন জানায়, ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে এমন কোনো উৎসব কাউকে করতে দেখিনি। তবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এর প্রচলন থাকলেও টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেন যেকোনো উৎসব করাই একটা কঠিন ব্যাপার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close