মুহাম্মাদ রাহাতুল ইসলাম

  ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

শিক্ষার্থীদের জন্য সংগঠন কেন জরুরি

জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম কোনো একটা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানেই অনেক অনেক মানুষের সঙ্গে মেশা, কথা বলা ও ওঠবসা করা। একে-অন্যের কাজে সহযোগিতা করা ও পরস্পরে মিলে যৌথ উদ্যোগে কোনো বিশাল কাজ সম্পাদনা করা। আর এই ছোট ছোট কাজ করতে করতেই তৈরি হয় এমন যোগ্যতা, উদ্যামতা ও কর্মতৎপরতা, যা কর্মজীবনে একজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে যেতে পারে অনন্য উচ্চতায়। যেমন ধরুন, ছাত্র থাকা অবস্থায় কিংবা কর্মজীবনে আমরা বিভিন্ন ভাইভা বোর্ডের সম্মুখীন হই, অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্রেজেন্টেশন দিতে হয় প্রতিনিয়ত। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছি কি, একজন শিক্ষার্থী কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে প্রেজেন্টেশন দিতে পারে। এ দক্ষতা অর্জন এক দিনে হয় না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলার সুবাদে নিজেকে যেমন তাদের সামনে তুলে ধরা যায়, পাশাপাশি তাদের থেকে শেখা হয় এমন সব বিষয় যেগুলো নিজের প্রয়োজন বা অজানায় থেকে গিয়েছিল, যা মূলত একজন শিক্ষার্থীকে নিজেকে প্রকাশে বা প্রেজেন্টেশনে যোগ্য করে তোলে।

অন্যদিকে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে একজন অন্যজনের সঙ্গে কত সুন্দরভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। একটি সংগঠনের ভেতর যেমন সাংগঠনিক আলাপ শেখা যায়, কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় সেটা শেখা যায়, কীভাবে কাজ সম্পাদনা করতে হয় শেখা যায়, ঠিক তেমনভাবে কীভাবে একটি কাজ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সুন্দর পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা করতে হয় সেটাও শেখা যায় এবং বাস্তবিক অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায় যেকোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে।

পাশাপাশি একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে নেতৃত্ব দানের গুণাবলি অর্জন করা যায়। যে গুণাবলি দ্বারা একজন শিক্ষার্থী একটা সময় পর সফলভাবে তার দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয়। এ ছাড়া সংগঠনগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনিয়ম-অনাচারের বিরুদ্ধে ও নানা ইস্যুতে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনসহ অনেক রকম ইভেন্টের আয়োজন করে থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, লিফলেট বিতরণসহ এই জাতীয় বিবিধ কাজের মাধ্যমে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা সমস্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলতে হয়। আর এসব কাজের মাধ্যমে এমনই এক বাস্তবিক যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব হয়, যা একজন শিক্ষার্থীর আপন কর্মক্ষেত্রের সফলতার জন্য ভীষণ ফলপ্রসূ।

পুরো সমাজটাই যেহেতু একটা শৃঙ্খলাবদ্ধ সংগঠনের মতো। আর যেহেতু সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি, ধর্ম, পেশা, বয়স এবং চিন্তাধারার মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে। তাই ভৌগোলিক অবস্থান সমাজের ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে। তাই অঞ্চলভেদে সমাজব্যবস্থার পার্থক্য দেখা যায়। ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের সমাজের মধ্যে হয়ে থাকে নানা রকম ভিন্নতা। সমাজের মানুষদের মননের উন্নয়ন কিংবা অবনতির ওপরেও সমাজের অবস্থা নির্ভর করে। আবার অধিকাংশ সময়ই কোনো সমাজের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে তা নির্ভর করে ওই সমাজের যুবক বা তরুণ শ্রেণির মানসিকতা কীভাবে বেড়ে উঠছে। সংগঠনগুলো মূলত সমাজ নিয়ে কাজ করে; সমাজের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উন্নয়ন, প্রচার-প্রসার এবং সমাজে নতুন কিছু উদ্ভাবনের জন্য সংগঠনগুলো কাজ করে থাকে, যার মূল চালিকাশক্তিই থাকে তারুণ্য। আর যথাযথ যোগ্যতা সম্পন্ন আদর্শ শিক্ষার্থী বা তরুণ প্রজন্ম নিশ্চিত করা যায় সংগঠনের দায়িত্বপালের মাধ্যমে। মোটকথা, সংগঠনগুলোই গড়ে আগামীর ভবিষ্যৎ নির্মাতাদের। যারা পরিচালনা করবে সমাজ নামক সংগঠনকে। তাই প্রত্যেক তরুণ শিক্ষর্থীর জন্যই উচিত বিভিন্ন ভালো ভালো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close