আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৭ মে, ২০২৪

গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি কট্টরপন্থিরা

গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইরায়েলিদের নতুন এক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যে যুদ্ধে কট্টর ডানপন্থি ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। বিশেষে করে কেরেম শালম ক্রসিং দিয়ে। অন্যান্য ক্রসিংয়েও একই কাণ্ড ছড়িয়ে পড়ছে।

বিবিসি জানায়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিওর রীতিমতো বন্যা বইছে। সেসব ছবি ও ভিডিওতে গাজার জন্য পাঠানো ত্রাণের লরি আটকে দিয়ে সেগুলো লুটপাট করতে এবং ত্রাণের প্যাকেট রাস্তায় ছুড়ে নষ্ট করতে দেখা যাচ্ছে। কট্টর ডানপন্থি বিক্ষোভকারী, যাদের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিততীরে বসতি স্থাপন করা ইহুদিরাও রয়েছে, এসব ছবি ও ভিডিও অনলাইনে পোস্ট করেছে বলেও জানায় বিবিসি।

তারা ভিড় করে ত্রাণের লরি আটকে ত্রাণের বাক্সগুলো খুলছে এবং খাবারের প্যাকেট মাটিতে ছুড়ে ফেলে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিচ্ছে। ওই ভিড়ের মধ্যে শিশুদেরও এসব করতে দেখা গেছে। ত্রাণ নষ্ট করা একজন বলেন, গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র এভাবেই আমরা জিততে পারব। একমাত্র এভাবেই আমরা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।

ওই ব্যক্তির মতো একই ধারণা অনেকে পোষণ করেন। তাদে যুক্তি, যত দিন পর্যন্ত জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হবে, তত দিন পর্যন্ত গাজার বাসিন্দাদের কোনো ত্রাণই পাওয়া উচিত না। গাজায় ত্রাণ পাঠিয়ে শুধু যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে।

বিবিসি জানায়, একটি ভিডিওতে কিশোর বয়সি বিক্ষোভকারীদের লুট করা একটি লরির মাথায় চেপে নাচতে এবং উদযাপন করতে দেখা যাচ্ছে। অন্য একটি ভিডিওতে আটকে পড়া লরির মধ্যে একটিতে আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে।

আরো বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি বিশৃঙ্খলাকারীরা অধিকৃত পশ্চিমতীরের জেরুজালেমে ত্রাণবোঝাই লরি জোর করে থামাচ্ছে এবং ওইসব ত্রাণ কোথায় যাচ্ছে চালকের কাছে তার প্রমাণ চাইছে। তাদের লক্ষ্য গাজার জন্য পাঠানো ত্রাণ আটকে দেওয়া ও নষ্ট করা। ছবি ও ভিডিওগুলোতে তাদের সবার মুখই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, তারা কতটা বেপরোয়া এবং কারো কাছে নিজেদের কাজের জবাবদিহি করার নেই।

বিবিসি জানায়, পশ্চিমতীরে অন্তত দুজন লরিচালককে টেনেহিঁচড়ে লরির কেবিন থেকে নামিয়ে মারধরও করা হয়েছে। অথচ তাদের কেউই গাজার জন্য ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছিলেন না। এ ধরনের ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ার কথা বলেছেন ফিলিস্তিনি লরিচালকরা।

আদেল আমরো নামে একজন বিবিসিকে বলেন, ক্রসিং পয়েন্টে যেতে আমি রীতিমতো আতঙ্ক বোধ করছি। আমার মনে হচ্ছে আমাকে মেরে ফেলা হতে পারে। আদেল ত্রাণ নয় বরং বাণিজ্যিক পণ্য নিয়ে পশ্চিমতীর থেকে গাজায় যাতায়াত করেন।

জর্ডান থেকে গাজার জন্য পাঠানো ত্রাণ নিয়ে আসা লরিতেও আক্রমণ করা হচ্ছে। জর্ডান থেকে পশ্চিমতীর ও ইসরায়েলের ওপর দিয়ে গাজায় পৌঁছাতে হয়।

আদেল বলেন, ‘আমরা এখন প্রধান সড়ক ছেড়ে পার্শ্ববর্তী সড়ক দিয়ে চলাচলের চেষ্টা করছি। যেসব রাস্তা প্রধান সড়ক থেকে বেশ খানিকটা দূরে। বসতি স্থাপনকারীরা যে রকম আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে, তাতে আমরা রীতিমতো ভীত হয়ে পড়েছি।’

তবে সব ইসরায়েলি এ কাজ সমর্থন করছেন না। বরং ইসরায়েলিদের একটি দল (দ্য গ্রুপ স্ট্যান্ডিং টুগেদার) উগ্র বিক্ষোভকারীদের থামাতে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close