আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৪ মে, ২০২৪

বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে ইসরায়েল

গাজা যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান ফিলিস্তিনি হতাহত নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল। ফলে দেশটি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তবে এবার যেন সে আশঙ্কাটিকে আরো একধাপ এগিয়ে গেল ইউরোপের তিন দেশ : স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে। বুধবার (২২ মে) ফিলিস্তিনকে একটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এমনকি দেশগুলো থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নিতেও বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশগুলো থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল। তবে কি বিশ্ব থেকে ইসরায়েল ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে- এমন প্রশ্নই সবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের আলোকে এ প্রশ্নের জবাব খুঁজব আমারা।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় তিন দেশের এমন সিদ্ধান্তকে ‘জঘন্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইসরায়েলি সরকারের এক মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, এই পদক্ষেপ গাজা বা অধিকৃত পশ্চিমতীরের ধ্বংসাবস্থা ঠেকাতে সামান্যই ভূমিকা রাখবে। কেননা, পশ্চিমতীরে তারল্য-সংকটে ভোগা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বেসামরিক কর্মচারীদের বেতন দিতেই হিমশিম খাচ্ছে।

গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল ওয়াশিংটন। এর আগে দেশটির বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল একাধিক দেশ। এরপর সাম্প্রতিক দিনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন পর্যন্ত করা হয়েছে। এতে করে দেশটি বিশ্ব থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের এমন আশঙ্কার মধ্যেই বুধবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় তিন দেশ। ২৮ মে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে তারা।

এদিকে, তথাকথিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিরোধ করে আসছেন নেতানিয়াহু। ২০২২ সালের শেষের দিকে নেতানিয়াহুর সরকারে কট্টর ডান ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী দলগুলোর যোগ দেওয়ার পর তার এই প্রতিরোধ আরো বেড়েছে।

তিন দশক আগে অসলো শান্তিচুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে তাদের কার্যকলাপ নিয়ে নেতানিয়াহু সরকার বেশ সন্দেহপ্রবণ। তাদের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনেছে ইসরায়েল। দেশটির অভিযোগ, ফিলিস্তিনি স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ইহুদিবিদ্বেষকে উৎসাহিত করার জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত সশস্ত্র যোদ্ধাদের পরিবারকে অর্থ প্রদান করে।

তাই ইউরোপীয় তিনটি দেশের এই সিদ্ধান্তকে ‘সন্ত্রাসবাদের পুরস্কার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন নেতানিয়াহু। একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ‘৭ই অক্টোবরের গণহত্যা পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা করবে’ বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

নেতানিয়াহুর এমন মন্তব্য গাজা যুদ্ধকে ঘিরে এই অঞ্চলের পরিস্থিতি কতটা তিক্ত হয়ে উঠেছে তারই বহিঃপ্রকাশ। একই সঙ্গে ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপর ভিত্তি করে এই অঞ্চলে একটি রাজনৈতিক মীমাংসার সম্ভাবনা কতটা ক্ষীণ এবং একটি শান্তিচুক্তির আলোচনা যে আপাতদৃষ্টিতে সম্ভব নয়, তাই উল্লেখ করছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close