প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪

হিজবুল্লাহর ভয়ে পালিয়েছে ৫০ হাজার ইসরায়েলি

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহের মধ্যে সংঘাত গত কয়েক সপ্তাহে বেড়েছে। এর ফলে ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকা থেকে অন্তত ৫০ হাজার ইসরায়েলি অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ডয়চে ভেলে। উত্তর ইসরায়েলের কিরিয়াট শামোনা শহর। গত তিন মাস ধরে এই জনপদ রীতিমতো ভুতুড়ে শহরের চেহারা নিয়েছে। খালি রাস্তা। এক-দুটো বাদে সব দোকান বন্ধ। নিঃস্তব্ধ শহর মাঝেমধ্যে কেঁপে উঠছে বিস্ফোরণের শব্দে। এই শহর হলো ইসরায়েল ও লেবানন সীমান্তের কাছে। হিজবুল্লাহের সামরিক ঘাঁটি এখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে।

সেখানকার পৌরসভার ইমার্জেন্সি টিমের সদস্য ওরিয়েল ফ্রিশ বলেন, অ্যালার্টের শব্দ শোনার পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে আমাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হচ্ছে। তারপরই আমরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। অনেক সময় বিস্ফোরণের শব্দের পর অ্য়ালার্টের শব্দ কানে আসছে। আমি যদি গাড়ি চালাই, তাহলে যেকোনো সময় আঘাত লাগতে পারে।

স্বাভাবিক সময়ে এই শহরে ২৩ হাজার মানুষ বাস করেন। কিন্তু হামাস যখন গাজার কাছে ইসরায়েলের শহর আক্রমণ করল, তারপর সরকার সীমান্তের সাড়ে তিন কিলোমিটারের মধ্যে থাকা শহর ও গ্রাম খালি করার নির্দেশ দেয়। তারপর ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকা থেকে ৫০ হাজার মানুষ চলে গেছেন। ইসরায়েলি সেনা বলছে যে, ৩৫ হাজার জনকে মধ্য ইসরায়েলে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধ শুরুর তিন মাস পর এখনো এটা স্পষ্ট হয়নি, তারা কবে আবার নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারবেন? গত সপ্তাহে ইসরায়েল যুদ্ধবিমান, কামান, রকেট নিয়ে আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়েছে। ইসরায়েলের মিডিয়ায় প্রায় প্রতিদিন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। মিডিয়া রিপোর্টে বলা হচ্ছে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অবশ্যম্ভাবী। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান স্থিতাবস্থা ভেঙে ইসরায়েল আগে আক্রমণ করতে পারে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলের সেনার নর্দার্নের এক অফিসার জানিয়েছেন, উত্তর ইসরায়েলের মানুষ মনে করছেন, তাদের বাড়ি ফেরাটা অবিলম্বে হবে না। হিজবুল্লাহ যত দিন সীমান্তের কাছে থাকবে, ততদিন বেসামরিক মানুষদের শহরগুলোতে ফেরা সম্ভব হবে না। এখনো পর্যন্ত এই সীমান্তে ইসরায়েলের নয়জন সেনা ও ছয়জন বেসামরিক মানুষ মারা গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, হিজবুল্লাহের কাছে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার অৎয়াধুনিক মিসাইল আছে।

মেইতাল ইয়োগেভ এখন সীমান্ত-শহর থেকে দূরে একটি হোটেলের দুইটি ঘর নিয়ে থাকেন। ৭ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি তার পার্টনার ও দুইটি শিশুর সঙ্গে লেবানন সীমান্তের কাছের একটি শহরে থাকতেন। তিনি বলেন, নিজের ঘরবাড়িই হলো আমাদের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। সীমান্তের কাছে থাকা সত্ত্বেও এটা মনে হয়েছে। হঠাৎ, বুঝতে পারি সেটা আর নিরাপদ নয়।

তার প্রথমে মনে হয়েছিল, কয়েকদিনের মধ্যে আবার নিজের বাড়িতে ফিরতে পারবেন। কিন্তু তা হয়নি। ইয়োগেভ বলছেন, ভবিষ্যতে কী হবে তা বলতে পারছি না। কী করে ওদের সঙ্গে চুক্তি হবে, তাও বুঝতে পারছি না। এটা ইসরায়েলের অস্তিত্বের লড়াই।

যুদ্ধের শুরুতেই তার পার্টনার সেনার রিজার্ভ ফোর্সে যোগ দিয়েছে। দিন পনেরো আগে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। কিন্তু তাকে এবার উত্তর ইসরায়েলে যেতে বলা হয়েছে। ইয়োগেভ জানিয়েছেন, আমার আবার ভয় করছে।

আমার রাগ হচ্ছে। রাজনীতিবিদদের উপর রাগ হচ্ছে। কী করে এটা থামবে? আমাদের

কী হবে?

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close