প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪

এক মাস যুদ্ধবিরতির পথে ইসরায়েল-হামাস

গাজা উপত্যকায় এক মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পথে অনেকটা অগ্রসর হয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস; কিন্তু সেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিয়ে উভয় পক্ষের মতপার্থক্য এখনো দূর হয়নি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের শুরু থেকে মধ্যস্থতার ভূমিকায় রয়েছে কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর। এই তিন দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামাসের হাতে থাকা ১৩০ জনেরও বেশি জিম্মি ও ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি, গাজায় সহিংসতা স্থগিত করা এবং উপত্যকায় ত্রাণের সরবরাহ আরো বাড়াতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এবং হামাস- উভয়ই এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, গত ১ ডিসেম্বর গাজায় মানবিক বিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যাবতীয় কূটনৈতিক তৎপরতা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। পরে ২৮ মার্চ কাতার ও মিসরের মাধ্যমে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বরাবর একটি প্রস্তাব পাঠায় হামাস। প্রস্তাবে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা নিজেদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত রয়েছে; তবে তার বিনিময়ে ইসরায়েলকে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, উপত্যকায় ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ করতে দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দিতে হবে।

কিন্তু হামাসের এই প্রস্তাবে সম্মত হয়নি ইসরায়েল। মধ্যস্থতাকারী একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই অসম্মতির প্রধান কারণ হামাসের এই ‘প্যাকেজ চুক্তি’। যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এই চুক্তিতে সম্মতি প্রদানের পরিবর্তে এ ইস্যুতে আলোচনা চালিযে যেতে আগ্রহী।

এদিকে ইসরায়েল অসম্মতি জানানোর পর হামাসও আর এ ইস্যুতে অগ্রসর হয়নি। ‘গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না করলে জিম্মিদের মুক্তি নয়’- এই অবস্থানে দীর্ঘসময় অনড় ছিল এই গোষ্ঠী। তবে পরে কাতার, মিসর এবং ওয়াশিংটনের চাপে এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস। তবে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চয়তা চাওয়া হয় যে- এই বিরতির পর গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হবে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, কোনো না কোনোভাবে হামাস সেই নিশ্চয়তা পেয়েছে এবং তার ফলাফল এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে এই গোষ্ঠীটির প্রাথমিক সম্মতি। হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন বন্ধ এবং উপত্যকা থেকে দখলদার বাহিনীকে স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দেবে- এমন যেকোনো চুক্তি-উদ্যোগ বা প্রস্তাব মেনে নিতে প্রস্তুত।

চাপে আছেন নেতানিয়াহু : ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবশ্য যুদ্ধের শুরু থেকেই বলে আসছেন যে, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বসের আগ পর্যন্ত এই অভিযান চলবে, তবে বর্তমানে এই ইস্যুতে বেশ চাপে রয়েছেন তিনি। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক- উভয় দিক থেকেই চাপ বাড়ছে তার ওপর।

অভ্যন্তরীণ চাপে থাকার প্রধান কারণ- হামাসের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মি এবং তার পরিবারের স্বজনরা। নেতানিয়াহু যদিও বলছেন যে জিম্মিদের মুক্ত করতে গাজায় অভিযান হচ্ছে, তবে সেনা অভিযানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কোনো জিম্মিকে মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। উল্টো ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা ও গোলায় নিহত হয়েছে কয়েকজন আটকে থাকা জিম্মি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close