লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করছে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি। এর জেরে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর অবস্থানগুলোতে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন এই হামলা হুতিদের আক্রমণ বন্ধ করতে পারেনি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এই পরিস্থিতিতে হুতিদের হামলা বন্ধে ইরানের প্রতি আহ্বান জানাতে চীনের দ্বারস্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ কাজে বেইজিংয়ের কাছ থেকে খুব বেশি সাড়া পায়নি ওয়াশিংটন। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের বরাত দিয়ে গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলাকারী ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের লাগাম টেনে ধরতে তেহরানের প্রতি আহ্বান জানাতে চীনকে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ কাজে বেইজিংয়ের কাছ থেকে সাহায্যের সামান্য লক্ষণই দেখতে পাওয়া গেছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এই খবর সামনে এনেছে। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন মাসে চীনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে বারবার হুতিদের হামলা ও এ বিষয়ে ইরানকে আহ্বান জানানোর বিষয়টি উত্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এবং তার ডেপুটি জন ফিনার চলতি মাসে ওয়াশিংটনে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বিভাগের প্রধান লিউ জিয়ানচাওয়ের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে পত্রিকাটি বলেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, চীন গত সপ্তাহে একটি ছোটখাটো বিবৃতি জারি করা ছাড়া হুতিদের নিয়ন্ত্রণে ইরানের ওপর কোনো চাপ দিয়েছে বলে প্রমাণ নেই। এর আগে বুধবার মার্কিন সামরিক বাহিনী ইয়েমেনে আবারও হামলা চালায়। সর্বশেষ এই হামলায় মার্কিন বাহিনী হুতিদের দুটি জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র লোহিত সাগরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।

এর আগে গত সোমবার গভীর রাতে ইয়েমেনে হুতিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে যৌথ বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন পরে জানায়, হুতি গোষ্ঠীর ওপর সোমবারের এ হামলায় আটটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি ভূগর্ভস্থ স্টোরেজ সাইট এবং হুতি ক্ষেপণাস্ত্র ও নজরদারি সক্ষমতাও রয়েছে।

ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম হামলা। আর গত ১১ জানুয়ারি যৌথ হামলা চালানোর পর এটি ছিল যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিতীয় যৌথ অভিযান।

"