প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

মার্কিন সেনা উপস্থিতির ইতি ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরাক

ইরাক সরকার দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক সামরিক জোটকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে, জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির কার্যালয়। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ২৫০০ ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় আরো ৯০০ সেনা মোতায়েন আছে। এরা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পুনরুত্থান ঠেকানোর মিশনে স্থানীয় বাহিনীগুলোকে পরামর্শ ও সাহায্য করে আসছে বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের।

বৃহস্পতিবার বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানপন্থি এক মিলিশিয়া নেতা নিহত হয়। এতে ইরানের মিত্র ইরাকি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। তারা ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর উপস্থিতির ইতি ঘটানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি তোলে। এরপর শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সুদানির কার্যালয় থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন মিশন শেষ করার বিবৃতি আসে; জানিয়েছে রয়টার্স।

সুদানির কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরাক থেকে আন্তর্জাতিক জোটবাহিনীর উপস্থিতির স্থায়ী সমাপ্তি ঘটানোর ব্যবস্থা করতে সরকার দ্বিপক্ষীয় কমিটি শুরুর তারিখ নির্ধারণ করছে। এই দ্বিপক্ষীয় কমিটিতে সামারিক জোটটির প্রতিনিধিরাও থাকবেন বলে ইরাক সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

পেন্টাগন জানিয়েছে, মার্কিন সেনাদের ওপর সম্প্রতি চালানো হামলাগুলোর প্রতিশোধ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার বাগদাদে ওই আক্রমণটি চালিয়েছিল। ইরান-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের (পিএমএফ) কমান্ডার মুস্তাক জাওয়াদ কাজিম আল-জাওয়ারিকে লক্ষ করে হামলাটি চালানো হয়েছিল। মার্কিন হামলায় কমান্ডার মুস্তাক নিহত হন বলে জানিয়েছে ইরাক সরকার। মুস্তাক ইরাকে মার্কিন বাহিনীর ওপর চালানো আক্রমণ ও এর পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ পেন্টাগনের।

২০১৪ সালে ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রধানত শিয়া মুসলিমদের নিয়ে পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসস (পিএমএফ) গড়ে তোলা হয়। আইএস পরাজিত হওয়ার পর ইরাক সরকার পিএমএফকে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

রয়টার্স বলছে, পিএমএফসহ ইরান-সমর্থিত কিছু গোষ্ঠীর ওপর ইরাকি প্রধানমন্ত্রী সুদানির তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই, কিন্তু এক বছর আগে ক্ষমতায় আসতে তার এই গোষ্ঠীগুলোর সমর্থন প্রয়োজন হয়েছিল; এখন তারা ইরাকের ক্ষমতাসীন সরকারের ভেতর একটি শক্তিশালী ব্লক গড়ে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক জোটের অস্তিত্বের ন্যায্যতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর এর উপস্থিতি শেষ করতে আমরা জোরালোভাবে আমাদের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানাচ্ছি, সুদানি এমনটি বলেছেন বলে বিবৃতিতে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে।

আইএস বৃহস্পতিবার ইরানের প্রয়াত শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেমানির মৃত্যুবার্ষিকীর আয়োজনে জোড়া বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে। বুধবারের ওই হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হয়। আহত হয় আরো ২৮৪ জন।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ এক রাজনৈতিক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ইরাকে মার্কিন উপস্থিতি শেষ করার জন্য ইরান ঘনিষ্ঠ শক্তিশালী শিয়া গোষ্ঠীগুলোর তীব্র চাপের মধ্যে পড়েছিলেন সুদানি, তাই ক্ষমতাসীন শিয়া গোষ্ঠীগুলোর জোটের মধ্যে মার্কিন বিরোধীদের শান্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close