নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ জানুয়ারি, ২০২৪

অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি

এবার স্টলের খোঁজ মিলবে সহজেই

* ২৫ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মেলায় নিয়ে আসতে চিঠি

অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪-এর বাকি আর মাত্র ১১ দিন। বর্তমানে অবকাঠামো বা স্টল নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। এবার মেলায় স্টল খুঁজতে আর ভোগান্তি থাকছে না। তবে অবকাঠামোগত বিন্যাস আগের মতোই আছে। একটা গলির সামনে দাঁড়ালে এর শেষ মাথা দেখা যাবে। গুচ্ছ আকারেও থাকছে না। প্যাভিলিয়ন ও স্টলের লাইন আলাদা থাকছে- যাতে স্টল খুঁজে পেতে সহজ হয়।

আগামী ২৩ জানুয়ারি লটারির মাধ্যমে প্রকাশকদের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে। ১ ফেব্রুয়ারি এ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে এবার শুরু থেকে মেলার স্থান নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল। সেসব কাটিয়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হচ্ছে গ্রন্থমেলা। সম্প্রতি সরেজমিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি চত্বরে দেখা যায়, মেলার বেষ্টনী নির্মাণের কাজ চলছে। তথ্যকেন্দ্র, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডাসহ বিভিন্ন মঞ্চ ও গ্রন্থমেলার মিডিয়া সেন্টার নির্মাণের কাজও চলছে। প্রতিবারের মতো এ বছরও গ্রন্থমেলায় খাবারের দোকান থাকছে। তবে চুলা না জ্বালানোর শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পেছনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের কাছে অল্প পরিসরে এ ব্যবস্থা হবে বলে জানিয়েছে পরিচালনা কমিটি।

গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমি মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক কে এম মুজাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলা নীতিমালা আইন উপদেষ্টার পরামর্শের ভিত্তিতে নতুন করে প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনাসহ মেলা পরিচালনা করে এসেছে। পরে মেলার পরিসর বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে সব কাঠামোসহ অন্যান্য কিছু অংশ সম্পন্ন করা হতো।

বাংলা একাডেমি জানায়, পত্রিকায় দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এ বছর প্রায় ৭০টি নতুন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মেলায় স্টল বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছিল। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত ২১টি প্রকাশনাকে বাছাই করা হয়েছে। এছাড়া গত বছরেরগুলো অপরিবর্তিত থাকছে। সব যাচাই-বাছাই শেষ হলে গ্রন্থমেলায় কতগুলো স্টল থাকছে তা ২৩ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। এ বছর নতুন করে বাংলা একাডেমি থেকে ঢাকার ২৫টি স্কুলের শিক্ষকদের তাদের শিক্ষার্থীদের গ্রন্থমেলায় আনার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া এবারের মেলায় আমরা পাইরেটেড (নকল) বই যাতে মেলায় বিক্রি বন্ধ হয়, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে অনুরোধ করেছি কমিটির কাছে।’ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আমরা শুধু মেলার পূর্বপ্রস্তুতি ও পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা ৭টি কোর কমিটি করেছি। এ কমিটি ভালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত মেলায় অনেক অভিযোগ ছিল। একটা প্রকাশনী নিয়ে অনেক অস্থিরতা ছিল, এবার সেটি নেই। আমরা গত বছরের মার্চ থেকে কাজ শুরু করেছি। এবার আমরা পুস্তক সমিতি থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সদস্য ও মন্ত্রণালয়সহ সবাইকে নিয়ে গ্রন্থমেলার একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করেছি।’

মেলার অবকাঠামোগত বিষয়ে মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এবারের মেলায় অবকাঠামোগত বিন্যাস আগের মতোই আছে। একটা গলির সামনে দাঁড়ালে এর শেষ মাথা দেখা যাবে। গুচ্ছ আকারে থাকবে না। প্যাভিলিয়ন ও স্টলের লাইন আলাদা থাকবে, যাতে স্টল খুঁজে পেতে সহজ হয়।’ ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্ধমান হাউস প্রাঙ্গণে বটতলায় এক টুকরো চটের ওপর ৩২টি বই সাজিয়ে বইমেলার গোড়াপত্তন করেন। এরপর নানা রূপ-রূপান্তরের মাধ্যমে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আজ বাঙালির আরাধ্য মেলায় পরিণত হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close