reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ মে, ২০২৪

যেভাবে আনারের মরদেহ কেটে টুকরো করে কসাই জিহাদ!

ছবি : সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জিহাদ হাওলাদার নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। এ জিহাদই এমপি আনারের মরদেহ কেটে ‘কিমা’ বানায়। পেশায় কসাই জিহাদ মুম্বাইতেও ‘শীর্ষ কসাই’ বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে এক বিবৃতিতে ভারতের সিআইডি জানায়, ২৪ বছর বয়সি জিহাদের বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার বারাকপুর গ্রামে। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইতে বাস করতেন তিনি।

বিবৃতিতে বলা হয়, এমপি আনার হত্যার পরিকল্পনাকারীরা মুম্বাই থেকে জিহাদকে নিয়ে আসেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে সেখানে বসবাস করছিলেন জিহাদ। দুমাস আগে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন, যিনি এ হত্যাকাণ্ডের ‘মূলহোতা’ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছেন, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চার জন এমপি আনারকে নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

তারপর ওই ফ্ল্যাটের মধ্যেই পুরো শরীর থেকে সব মাংস আলাদা করে সে (জিহাদ) এবং ‘মাংসের কিমা করে’ সেগুলো কিছু পলিথিনে রাখে। হাড়গুলোকেও ছোট ছোট টুকরো করে প্যাকেট করা হয়। পরে সেই প্যাকেটগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যবহার করে কলকাতা ও আশপাশের এলাকা বিশেষ করে ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি এলাকায় ফেলে দেয়।

এমন তথ্য পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতার কাশিপুর থানার অন্তর্গত ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি নামক এলাকায় অভিযানে যায় পশ্চিমবঙ্গ গোয়েন্দা পুলিশ। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে তারা। সরিয়ে দেয়া হয় আশপাশের লোকজনকে।

যদিও এখন পর্যন্ত মরদেহর কোনো অংশ উদ্ধার করা যায়নি। তবে তা খুঁজতে এবার মাঠে নেমেছে স্থানীয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ।

এদিকে, জিহাদ হাওলাদারকে আজ শুক্রবার (২৪ মে) উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত আদালতে তোলার কথা। এরপর তাকে নিয়ে বাকি আসামিদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

গত ১২ মে বাংলাদেশের দর্শনা ও ভারতের গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন ঝিনাইদাহ-৪ আসনের (কালীগঞ্জ) এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। বরাহনগরে পূর্বপরিচিত গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে এক রাত থেকে ১৩ মে দুপুরে একটি গাড়িতে চড়ে বেরিয়ে যান আনার।

এরপর থেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় সবার। ১৮ মে বরাহনগর থানায় মিসিং ডায়েরি করেন গোপাল বিশ্বাস। আর এর ৫ দিন পর ২৩ মে বুধবার জানা গেলো নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে তিনবারের নির্বাচিত আওয়ামী লীগের ওই এমপিকে। যদিও তার দেহ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

আনারের জন্ম ৩ জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে। পেশায় ব্যবসায়ী আনার আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন।

ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে তিনবার (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) নির্বাচিত আনার একজন ক্রীড়া সংগঠক এবং এক সময়ের জনপ্রিয় ফুটবল খেলোয়াড়।

ছাত্রজীবন থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে শুরু করেন। স্থানীয় পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে ভোটের রাজনীতি শুরু করেন তিনি।

এরপর বিশাল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হন আনার। সবশেষ তিনটি জাতীয় নির্বাচনেও তিনি জয়ের ব্যবধান নিয়ে জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রাখেন।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কসাই জিহাদ,মুম্বাই,এমপি আনার,উপজেলা ভোট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close