reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মাসে ৫ কোটি টাকার হেরোইনের কারবার!

ছবি : সংগৃহীত

সীমান্তবর্তী এলাকা হয়ে নদীপথে প্রতি মাসে চার থেকে পাঁচ কেজি হেরোইন আনা হতো। প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সেই হেরোইন এ চক্রের নারী সদস্যদের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হতো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদক সেবীদের হাতে। চক্রের হোতা শাকিবসহ তিন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করার পর ভয়াবহ এই তথ্য জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের পাঁচ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের অন্যতম হোতা মো. শাকিবুর রহমান ওরফে শাকিব (৩৫), তার স্ত্রী মোছা. রাজিয়া খাতুন (৩৩) ও মোছা. সেলিনা খাতুন ওরফে শিরিনা (৩৮)। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১২ যৌথ অভিযানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি পাশের দেশ থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে নদীপথে প্রতি মাসে ৪-৫ কেজি হেরোইন নিয়ে আসতো। মাদক পরিবহনের কৌশল হিসেবে শাকিব নারী সদস্যদের ব্যবহার করতো। তাদের মাদক কারবার চক্রে ১০-১২ জন সক্রিয় নারী সদস্য রয়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিনিয়ত ৫০০/৬০০ গ্রাম করে হেরোইন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে দিতো। প্রতিটি চালান পরিবহনের জন্য বহনকারীকে ১৫-২০ হাজার টাকা দেওয়া হতো। চালানের পরিমাণ বেশি হলে শাকিব বিভিন্ন সময় তার নিজের মোটরসাইকেলযোগে পরিবহন করতো। এই চালানে তিন কেজির বেশি হেরোইন থাকায় শাকিব নিজেই তা বহন করছিলেন।

র‌্যাব মুখপাত্র আরও বলেন, শাকিব তার নওগাঁর বাসায় আরও দুই কেজি হেরোইন থাকার ব্যাপারে তথ্য দেয়। পরে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তার স্ত্রী গ্রেপ্তার সেলিনা খাতুনের কাছ থেকে দুই কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শাকিব আগে চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল এবং এলাকায় তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে। গত প্রায় দুই বছর ধরে সে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। সে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তার ব্যবসায়িক সহযোগীর মাধ্যমে হেরোইন সংগ্রহ করে প্রথমে নিজের বাড়িতে সংরক্ষণ করতো।

পরবর্তীকালে চাহিদা অনুযায়ী বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করতো। বিভিন্ন সময় তিনি নিজের মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন স্থানেও এসব মাদকের চালান পরিবহন করতো।

এছাড়াও চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সময় যাত্রীবাহী বাস, লঞ্চ এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কারবারিদের কাছে হেরোইন সরবরাহ করতো শাকিব। হেরোইন বিক্রির টাকা সংগ্রহ করা হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেপ্তার রাজিয়া খাতুন শাকিবের স্ত্রী। সে তার স্বামীর মাদক কারবারের সহযোগী। প্রতিবেশী দেশ থেকে আনা হেরোইনের একটি অংশ শাকিব নিজ বাড়িতে তার স্ত্রীর হেফাজতে রাখতো। বিভিন্ন সময় আস্থাভাজন মাদক কারবারিরা হেরোইন সংগ্রহ করতে এলে সেলিনা তাদের হেরোইন সরবরাহ করতো।

খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার সেলিনা খাতুন ওরফে শিরিনা শাকিবের হেরোইন চক্রের অন্যতম নারী সহযোগী। সে প্রায় এক বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার শাকিবের সঙ্গে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে হোরোইন সরবরাহ করেছে সেলিনা। বৃহস্পতিবার রাতেও গাজীপুর ও সাভারের বিভিন্ন স্থানে হেরোইন সরবরাহ করার জন্য নওগাঁ থেকে শাকিবের সঙ্গে রওনা হয় সে। পথে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে র‌্যাবের হাতে দুজনই গ্রেপ্তার হয়।

পিডিএস/এইচএস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
র‌্যাব,হেরোইন,মাদক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close