অভিনব রঙের ব্যবহারে বিমূর্তকে মূর্ত করে তোলেন। বর্ণিল তুলির ছোঁয়ায় ক্যানভাসে ওঠে আসে চেনা জগত, আনন্দ বেদনা, আশা ও স্বপ্নের ভুবন। শিল্পী নাঈমা রহমানের রং তুলি সাবলীলভাবে কথা বলে দর্শকদের সাথে।

এক সময়ের প্রভাব প্রতিপত্তির স্মারক প্রাসাদ, আজ জনাকীর্ণ পরিত্যাক্ত আবাসন। শিল্পী নাঈমা রহমান তার ক্যানভাসে দুইটি দিক এক সাথে উপস্থাপন করেছেন। লাল রঙের অভিনব ব্যবহারে প্রতাপ আর ধংসের কাহিনি প্রকাশ করে। এর মাঝেও নানা বর্ণিল রঙ যেন উৎসবে মেতেছে। মাঝে মাঝে সাদা বকের সারি। যা দেখে আমাদের মনে যে উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয় তা নিপুণভাবে বুনেছেন তার বকের সারি ছবিতে। তার নৈসর্গিক রূপ কবিতার পঙক্তির মতো ছন্দায়িত। যা প্রকাশের সাথে দৃষ্টির ভিন্নতা একাত্ম রূপে প্রকাশ পেয়েছে। যেমন তার আবেগের ভিন্নতার সাথেও অতি সাবলীল। এ যেন ছবি নয়, প্রকৃতি কথা বলছে।

ভাস্কর্য সৃষ্টিতে নাঈমা রহমান নিজেকে তুলে ধরেছেন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে। শ্রেণি সংগ্রাম, শোষিতের নিপীড়ন প্রকাশ করেছেন সাহসিকতার সাথে। তার শিল্পকর্ম হয়ে উঠেছে নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর। যেখানে তিনি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন মানুষের কঠিন জীবন সংগ্রামকে। ধনীদের কালো বুটের নিচে পিষ্ট হওয়া সাধারণ মানুষের যে চিত্র তিনি তার শিল্পকর্ম ‘Brutal step’ ভাস্কর্যে তুলে এনেছেন তার জন্য প্রয়োজন ধ্যান, এর পাশাপাশি সাহস আর সহমর্মিতার।

এছাড়া তার মেটালে করা কাজ ‘Balence of life’-এ একাকিত্ব জীবনের কঠিন বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রদশনীগুলোর মধ্যে রয়েছে আমেরিকার north Carolina-য় Innocence নামক একক চিত্রকর্ম প্রদশনী।

২২তম জাতীয় শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ২০১৭। ২১তম নবীন শিল্পকম প্রদর্শনী ২০১৮। এছাড়া রাজস্থান, জলপাইগুড়িসহ আরো বেশ কিছু ছোট বড় প্রদর্শনীতে অংশগ্রহন করেছেন।

ইকো সিস্টেম পৃথিবীর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে আমরা বেশি অনুধাবন করছি। এই সচেতনতা থেকেই তিনি প্রাকৃতিক রঙ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন। যা তার ফ্যাশন ডিজাইনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছেন।

ছোটবেলা থেকেই তার ছবি আঁকার প্রতি ভালোবাসা। তাই চারুকলায় শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি শিক্ষকতা, ফ্যাশন ডিজাইনার এবং মুক্ত শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন।