পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পাক নৌ বাহিনীর মহড়া, আরব সাগরে নিরাপত্তা

গত ৫ আগস্ট অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীর ছিল বিশৃঙ্খল অবস্থায়। নিউইয়র্কে এক আলোচনা সভায় নাম না করে কংগ্রেস জমানার তুলোধনা করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তার কথায়, গত ৩০ বছরে ৪২ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতে সরকার কী ভূমিকা রয়েছে, সে বিষয়েও যুক্তি দিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তার সাধারণ সভার ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। জম্মু-কাশ্মীরে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে বলে দাবি করেছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, ল্যান্ড লাইন, মোবাইল টাওয়ারের সংযোগ ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ-বাজার অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু কেন অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার এ বিষয়ে বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেছেন, গত ৩০ বছরে ৪০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরে।

অন্যদিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব করা এবং তাকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে ফেলা নিয়ে ভারত বিরোধিতার সুর চড়াচ্ছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মঞ্চকে ব্যবহার করার কৌশলও জারি রেখেছে ইসলামাবাদ। আর তাতে ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে। এই আবহে এবার উত্তর আরব সাগরে নৌ বাহিনীর মহড়া শুরু করেছে ইমরান খান সরকার। পরিস্থিতি আঁচ করে নিজের জলসীমায় নিরাপত্তা আরও বাড়াচ্ছে ভারত।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর আরব সাগরে মহড়া চালাচ্ছে পাক নৌ বাহিনী,চলবে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট এবং আরও নানা সমরাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হবে। এজন্য ওই এলাকা দিয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে বাণিজ্য তরীগুলিকে সতর্কও করেছে ইসলামাবাদ। খবর সাত থেকে আটটি পাকিস্তানের যুদ্ধ জাহাজ মহড়া চালাচ্ছে।

ভারতের আশঙ্কা, ওই মহড়ার সময় পাকিস্তানের সেনা বা ওই সুযোগ নিয়ে জলপথে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী হামলা চালাতে পারে। প্রতি বছরই যৌথভাবে নৌ এবং বিমান মহড়া চালায় পাকিস্তান। কিন্তু সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর এবার পরিস্থিতি ভিন্ন রকম। তাই প্রতিবেশী দেশের থেকে কোনো রকম দুঃসাহসিক প্রতিক্রিয়া আসতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই আরব সাগরে নিরাপত্তায় আরও জোর দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। নিজেদের জলসীমায় যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন ছা়ড়াও পসাইডন-৮১ নামে নজরদারি বিমানও মোতায়েন করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে যুদ্ধ বিমানও।

পুলওয়ামা হামলার পর বিমানহানায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বালাকোটে জইশের জঙ্গি ঘাঁটি। কিন্তু তার মাত্র সাত মাসের মাথায় বালাকোটের সেই জঙ্গি শিবিরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। এমন সময়ে তাই কোনো রকম ঝুঁকি নিতে নারাজ ভারতীয় নৌ বাহিনী। দু’দেশের কূটনৈতিক উত্তেজনার মাঝেই গত মাসেই শাহিন ৮ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে পাকিস্তান। তাই এবারও সতর্ক নয়াদিল্লি।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নৌ বাহিনী,আরব সাগর,ভারত,নিরাপত্তা জোরদার
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close