সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

  ২৪ মে, ২০২৪

সরিষাবাড়ীতে অভিযোগ

শৃঙ্খলা ভঙ্গেও দলীয় শাস্তি পাননি সেই অধ্যক্ষ

ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার সাইদুল হাসান (সাদা বৃত্ত চিহ্নিত)। গত ২৭ এপ্রিল জেলহাজতে পাঠানোর সময় তোলা। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নির্বাচন ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা হুমকিমূলক বক্তব্যের অপরাধে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও হাজতবাস করলেও সাংগঠনিক শাস্তি পাননি বিতর্কিত সেই আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ (সাময়িক বরখাস্ত) সাইদুল হাসান সাইদ। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকলেও তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদকের পদকে ব্যবহার করে সাইদুল হাসান সুজাত আলী কলেজ, পিংনা উচ্চবিদ্যালয় ও গোপালগঞ্জ গরুর হাটসহ এলাকায় প্রভাব ও একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে আসছেন। নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের পরও তার সাংগঠনিক শাস্তি না হওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বরাবর লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা যায়।

জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে গত ২৩ এপ্রিল একটি পথসভায় সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান প্রতিপক্ষকে এজেন্ট দিতে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। একইসময় তিনিসহ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় প্রতিপক্ষের এজেন্টদের দাঁত ও চাপার হাড্ডিসহ হাত ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপের হুমকি দেন।


  • সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা হুমকিমূলক বক্তব্য
  • অধ্যক্ষের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও জেল
  • জামিনে এসে অধ্যক্ষের চেয়ার দখল ও দলীয় পদে বহাল
  • সাংগঠনিক নিয়মানুযায়ী সুপারিশমালা পেলে জেলা আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান জেলার দলীয় সভাপতি

এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে ২৭ এপ্রিল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাখাওয়াৎ হোসেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই দিনই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় এবং ওই দিন থেকেই সাইদুল হাসানকে কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে ৯ মে জেলহাজত থেকে জামিনে এসে গভর্নিংবডির সভাপতির আদেশ অমান্য করে চেয়ার দখল করেন। একই সঙ্গে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা হুমকিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ভঙ্গ হলেও আজ অবধি তাকে দলীয় শাস্তি দেওয়া হয়নি। উল্টো জামিনে এসে আগের মতোই তিনি অধ্যক্ষের চেয়ার ও দলীয় পদ ব্যবহার করে আসছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ সাইদুল হাসানের পক্ষে থাকায় তিনি দলীয় শাস্তির আওতামুক্ত আছেন। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ডিবি ও এসপি অফিসে তদবির এবং জেলখানায় একাধিকবার ছুটে যান কয়েকজন নেতা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তহীনতায় এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি জেলা আওয়ামী লীগও।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. হারুন অর রশিদ এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যেহেতু এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বৈঠক হয়নি, সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার মতো সুযোগ আছে কি না তা সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত দাপ্তরিকভাবে কোনো চিঠি পাইনি। উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক নিয়মানুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে সুপারিশমালা পাঠালে জেলা আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ (সাময়িক বরখাস্ত) সাইদুল হাসান সাইদকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জামালপুর,সরিষাবাড়ী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close