লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ২৩ মে, ২০২৪

পল্লী চিকিৎসক হত্যা

লাশ উদ্ধারের ৬ মাস পর মামলা, স্ত্রী-কন্যা গ্রেপ্তার

ছবি: প্রতীকি

লালমনিরহাটে পল্লী চিকিৎসক হরেন্দ্রনাথ সেনের লাশ উদ্ধারের ৬ মাস পর আদালতে করা ছেলের মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ মে) রাতে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, হরেন্দ্রনাথের দ্বিতীয় স্ত্রী মাধবী রাণী (৪৫) ও মামলার অপর আসামী হরেন্দ্রনাথ ও মাধবী রাণীর মেয়ে তাপসী রাণী (২৫)। পল্লী চিকিৎসক হরেন্দ্রনাথ সেন উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের মৃত হেমন্ত সেনের ছেলে।

অভিযোগে জানা যায়, পল্লী চিকিৎসক হরেন্দ্র নাথের প্রথম স্ত্রী মারা যান ১৯৯৮ সালে। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন মাধবী রানী সেনকে। দ্বিতীয় স্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে সংসার চলে যাওয়ার পর ২০১২ সালে নিহতের প্রথম স্ত্রীর সন্তান প্রশান্ত ও প্রদীপকে বাড়ি থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়। এরপর দুই ভাই কোনদিনই আর বাড়িতে ফিরতে পারেননি। দ্বিতীয় স্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে ছিলেন হরেন্দ্র নাথ সেন। নিজের ছেলে সন্তান না থাকায় সতীনের ছেলেদের বঞ্চিত করে মাধবী স্বামীর কাছ থেকে সব জমি নিজের নামে লিখে নেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়, গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মাধবী অন্য আসামীদের সহযোগিতা নিয়ে হরেন্দ্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহটি ঘরের মেঝের ওপর রেখেছিলেন। এ সময় সব আসামীরা বাড়ির ভেতর ছিলেন। বাড়ির প্রধান দরজা বন্ধ রাখায় গ্রামের লোকজন বাড়ির ভেতর প্রবেশ করতে পারেননি। এরপর ওইদিন বিকেলে সদর থানাপুলিশ হরেন্দ্রের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দেয় হরেন্দ্রনাথের ছেলে প্রশান্ত সেন।

কিন্তু পুলিশ মামলা না নিলে গত ১৩ মে হরেন্দ্রনাথের দ্বিতীয় স্ত্রী মাধবীসহ আটজনকে আসামী করে আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসাইনের আদালত ওইদিনই মামলাটি রেকর্ড করে ৫ দিনের মধ্যে আইনী ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন সদর থানাপুলিশকে। আদালত থেকে মামলার কপি পাওয়ার পর বুধবার রাতে মাধবী ও তাপসীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার বাদী প্রশান্ত কুমার সেন বলেন, থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ তার অভিযোগ আমলে নেয়নি। পরে সহযোগিতা না পেয়ে ৬ মাস পর আদালতের আশ্রয় নেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের বিমাতা ষড়যন্ত্র করে বাবার কাছ থেকে বসতভিটাসহ প্রায় ৭ বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাশেদুল ইসলাম বলেন, গেল বছর ১৩ ডিসেম্বর থানায় একটি সাধারন ডায়রী (জিডি) করে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ভিসারা রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। এ কারণে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়নি। আদালতের আদেশে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। দ্রুত বাকী আসামীদেরও গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানান তিনি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
লালমনিরহাট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close