মাদারীপুর প্রতিনিধি
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন প্রতিবন্ধী মরিয়মের
দরিদ্রতা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে সফলতা অর্জন করেছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শাখারপাড়ের শারীরিক প্রতিবন্ধী মরিয়ম আক্তার (১৮)। এসএসসি পরিক্ষায় ব্যবসা শাখা থেকে জিপিএ ৩.৬১ পয়েন্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। এতে খুশি পরিবার, শিক্ষক ও এলাকাবাসী। তবে মরিয়মের দুটি পা ও একটি হাত অকেজো হলেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বা সরকারি অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এদিকে অভাব-অনটনের সংসারে একটি পাশে দাঁড়ানো কথা জানান মেয়েটির মা-বাবা।
পরিবারের স্বজনরা জানায়, রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় গ্রামের ভ্যান চালক সেলিম শরীফ ও আখলিমা বেগম দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে বড় মরিয়ম। জন্ম থেকেই তার দুই পা ও ডান হাত অকেজো। হাটাচলা ও ভারী কাজ করতে না পারলেও হুইলচেয়ারে বসে বাম হাতেই প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে থাকে সে। ছোট বেলার থেকে পড়ালেখার প্রতি অতি আগ্রহ ছিল তার। এজন্য অভাব-অনটনের সংসার হওয়া সত্ত্বেও তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেয় ভ্যান চালক বাবা সেলিম। পরে শাখারপাড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ সালের এসএসসি পরিক্ষায় অংশ নেয় মরিয়ম। বাম হাত দিয়ে লিখে একবারেই সফলভাবে এসএসসি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।
শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার জানান, তার স্বপ্ন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু তার বাবা একজন ভ্যান চালক। প্রতিবন্ধীদের অবহেলা না করে, তাদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ জানায় মরিয়ম।
শাখারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রিয়াজ মোল্লা বলেন, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মরিয়মের ক্লাস রোল এক-তিনের মধ্যে ছিল। আমরা আশা করেছিলাম তার রেজাল্ট আরো ভালো আসবে। তারপরও আমরা অনেক খুশি।
প্রতিবন্ধী মরিয়মের বাবা ভ্যান চালক সেলিম শরীফ ও মা আখলিমা বেগম জানান, মরিয়মকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন আছে। তবে অভাবের সংসারে চলাতে কষ্ট হয়।
রাজৈর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বাদশাহ ফয়সাল বলেন, আমাদের এখান থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা পায় মরিয়ম। এসএসসিতে তার সফলতা অর্জন দেখে আমরা খুশি। তার উচ্চ শিক্ষার জন্য আমাদের অফিস থেকে তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করবো।