শামীম হোসেন সামন, নবাবগঞ্জ (ঢাকা)

  ২২ মে, ২০২৪

নবাবগঞ্জে ৭ মাসে নালার অর্ধেকও হয়নি, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে প্রতিবাদ

নবাবগঞ্জ সদরের সড়কে নালার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রতিবাদে বুধবার মানববন্ধন। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

ঢাকার নবাবগঞ্জ সদরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসনে নালা (ড্রেন) নির্মাণে ধীরগতি ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা সদরের কায়কোবাদ চৌরাস্তা থেকে নবাবগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে ইছামতী নদী পর্যন্ত এই নালা নির্মাণ করছে এলজিইডি।

এদিকে নালার কাজে নিম্নমানেরসামগ্রী ব্যবহারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নির্মাণকাজের এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।

দরপত্র অনুযায়ি, সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ৫৬ লাখ টাকার দরপত্রে নালা তৈরির ঠিকাদারি পায় মোহাম্মদ ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড এটি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ৫ নভেম্বর কাজ শুরু করে আট মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে প্রায় সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজের অর্ধেক শেষ হয়নি। সরেজমিনে কাজের ধীরগতি ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, কায়কোবাদ চৌরাস্তা থেকে ইছামতী নদী পর্যন্ত সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে। এছাড়া ওই রাস্তার পাশে একাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং দোহার-নবাগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থী, উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়, থানা, আনসার ভিডিপি ক্যাম্প, খেলার মাঠ, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বহু বিপনী ও দপ্তর রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে এই সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। নালা তৈরি হলে দিয়ে সড়কের পাশের নবাবগঞ্জ বাজারের পানিও প্রবাহিত হবে।


  • দরপত্রে আট মাসের মধ্যে শেষ করার শর্ত
  • মূল ঠিকাদার অনুপস্থিত, কাজ করছে অন্যজন
  • সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচল

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘কাজের ক্ষেত্রে ঠিকাদারের গাফিলতি রয়েছে, খুবই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে তারা। যেহেতু জনদুর্ভোগ লাঘবের জন্য এই উন্নয়ন কাজ, তাই এটি যাতে টেকসই হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

নবাবগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, ‘জনগণের জন্য সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে, অথচ ঠিকারদার তার লাভের জন্য নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন। এই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ড্রেনেজ কাজ করা যাবে না। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলল, এ বন্ধ করে ভালোভাবে কাজ করা হোক।’

মানববন্ধনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কাজের ধীরগতির প্রতিবাদ জানিয়ে ভালমানের সামগ্রী দিয়ে টেকসই কাজ করার জন্য ঠিকাদারের প্রতি দাবী জানান।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদ ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্সে স্বত্বাধীকারী হৃদয় জানান, ‘আমি বিশেষ কারণে কাজের স্থলে যেতে পারিনি, অন্য একজনকে দায়িত্ব দিয়েছি। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে থাকলে, তা বদলে দিব। ড্রেনেজ কাজে একটু সময় লাগে, নয়তো টেকসই হয় না।’

জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ এলজিইডির প্রকৌশলী জুলফিকার হক চৌধুরী বলেন, ‘নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা একটা অভিযোগ, স্থানীয়রা আমাকে ফোনে জানিয়েছেন। আমি তাৎক্ষনিকভাবে উপসহকারি প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান ফকিরকে কাজের স্থলে গিয়ে সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছি।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close