বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়া
৫৭ বছর বয়সে পুলিশ সদস্যের এসএসসি পাস
সাতান্ন বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন বগুড়ার ট্রাফিক পুলিশের সদস্য আব্দুস সামাদ। অনেকের নানা সমালোচনাকে পিছনে ফেলে আপন লক্ষ্যে অবিচল থেকেই তিনি পেয়েছেন এই সফলতা বলে জানান তিনি। চলতি বছরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়েছেন তিনি। চাকরি থেকে অবসর নিয়ে হোমিও চিকিৎসক হবেন তাই আবারো পড়াশোনা, পুলিশ সুপারসহ সহকর্মীদের অনুপ্রেরনা পেয়েছেন তিনি। চেষ্টা থাকলে সফল হওয়া যায় যা দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের মধ্যবৃত্ত পরিবারের সন্তান আব্দুস সামাদ স্বচ্ছল হওয়ার জন্য পুলিশে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালে জন্ম নেওয়া সামাদ ১৯৮৭ সালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগ দেন। বগুড়ার শেরপুর, সদর ও নন্দীগ্রাম ডিএসবি, সদর কোর্ট এবং সর্বশেষ বগুড়া ট্রাফিকে কর্মরত রয়েছেন তিনি। চাকরির বয়স আছে ২ বছর ১০ মাস। চাকরি করা অবস্থায় ৩২ বছর ধরে হোমিও বই পড়েন তিনি, চাকরি থেকে অবসর নিয়ে চিকিৎসা পেশায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। হোমিওপ্যাথি কোর্সে ভর্তি হতে এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট প্রয়োজন। সেই স্বপ্ন থেকেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ২০২২ সালে নাটোর মহরকয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউটে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পর ক্লান্তি আসলেও পড়াশোনা করেছেন তিনি। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। তার এমন সফলতায় রবিবার সন্ধ্যায় বগুড়া সদর ট্রাফিক ফাঁড়িতে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আব্দুস সামাদ জানান, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ওপর ছোট থেকেই আগ্রহ ছিল। অবসরে যাওয়ার পর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে সবাইকে সেবা করতে চান তিনি। তার পরিবার ও ডিপার্টমেন্ট অনেক সহযোগিতা করেছেন, শতবছর বয়সী মা তার সফলতার কথা শুনে অনেক খুশি হয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, আব্দুস সামাদ ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করায় তার সফলতাকে অভিনন্দন জানাই। তার সফলতা নিশ্চয় এটা মানুষের উৎসাহের বিষয়, চেষ্টা থাকলে সফল হওয়া যায় যা দৃষ্টান্ত বলে জানান তিনি।