মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

  ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

মদনে অভিযোগ

ষাঁড়ের লড়াইয়ের আড়ালে জুয়া, বন্ধ করল ইউএনও

মদনের কাইটাইল ইউনিয়নের বটতলার গনেশের হাওরে অবৈধ ষাঁড়ের লড়াই ও জমজমাট জুয়ার আসর। মঙ্গলবার সকালে তোলা। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

নেত্রকোনার মদনে পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে অবৈধ ষাঁড়ের লড়াই ও জমজমাট জুয়ার আসরের আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়া মেম্বারের বিরুদ্ধে। তবে এমন আয়োজনের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া তা বন্ধ করে দেন।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বটতলার গনেশের হাওরে এমন ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি ষাঁড় ও হুমায়ূন কবির নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে মামলা দিয়ে হুমায়ূনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আটক হুমায়ূন কবির জেলার আটপাড়া উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের বাসিন্দা। আটক করা ষাঁড়ের মালিক না পাওয়ায় মদন থানায় রয়েছে। অভিযুক্ত জিয়া উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।

ইউএনও কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গণেশের হাওরে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করেন কাইটাইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কেশজানি গ্রামের জিয়া মেম্বার। পাশের উপজেলা কেন্দুয়ার বলাইশিমুল গ্রামের একটি ষাঁড়ের সঙ্গে লড়াই হয় কেশজানি গ্রামের শাহ আলম মিয়ার ষাঁড়ের। অবৈধ এই ষাঁড়ের লড়াইকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জুয়ায় অংশ নিতে রাত থেকেই গণেশের হাওরে জড়ো হতে থাকে মানুষ।


  • পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে আয়োজন
  • কোন পুলিশ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন থানার পরিদর্শক

পরে ভোর ৫টার দিকে ষাঁড়ের লড়াই ও জমজমাট জুয়ার আসর জমে। অবৈধ এই লড়াইয়ের জন্য থানা ম্যানেজ করার জন্য মোটা অংকের টাকা দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে এমন খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ইউএনও ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও আনসার সদস্যদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। পরে অভিযানে পুলিশও যুক্ত হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ষাঁড়সহ হুমায়ুন কবিরকে আটক করে মদন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা কেশজানি গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও সুহেল মিয়া জানান, মদন থানার পুলিশকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ষাঁড়ের লড়াই ও জুয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য পুলিশ তা বন্ধ করতে আসেনি।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জিয়া মেম্বার মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি এসবের আয়োজন করেনি। কিন্তু আমি আসরে গিয়েছিলাম দেখতে।’

মদন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম এ বিষয়ে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হুমায়ূনকে মঙ্গলবার নেত্রকোনার আদালতে পাঠানো হয়েছে। এবং ষাঁড়টি থানায় আটক আছে যার মালিক এখনো পাওয়া যায়নি।

টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওসি সাহেব ছুটিতে আছেন। যদি কোন পুলিশ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত থাকে তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইউএনও শাহ আলম মিয়া জানান, এলাকাবাসীর সংবাদের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ষাঁড়ের লড়াই ও জুয়ার আসর বন্ধ করা হয়।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নেত্রকোনা,মদন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close