মাসুদ রানা, রৌমারী (কুড়িগ্রাম)

  ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

কুড়িগ্রামের রৌমারী

ধরার পর এনজিওর কর্তা বলছেন ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের’ শিকার

ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত সহকর্মীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগে জনতার হাতে আটক হন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন (এনজিও) এর নির্বাহী পরিচালক আবু হানিফ মাস্টার। পরে বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাড়া পান তিনি। তবে এখন দাবি করছেন, তাকে ডেকে নিয়ে ফাঁসানো হয়েছে, তিনি ‘রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্তের’ শিকার। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রৌমারী থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করা হয়ে।

এর আগে সোমবার বিকালের দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাইটকামারী গ্রামে জনতার হাতে আটক হন সেন্টাফর স্যেসাল ডেভেলপমেন্ট কুড়িগ্রাম (সিএসডিকে) এর কর্মকর্তা আবু হানিফ মাস্টার।

পুলিশ, স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রৌমারীর স্থানীয় এনজিও সিএসডিকের সহকারি পরিচালক মৃত্যুর পর তার স্ত্রী তাহমিনা আকতার রোকসানা সঙ্গে আবু হানিফ মাস্টারের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। ঘটনার দিন আবু হানিফ গিয়ে তাহমিনার ঘরে ঢুকে পড়লে বিষয়টি টের পেয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেন তার শাশুরি। এ সময় শাশুরির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এতে দুজনকে আটক করে। পরে স্থানীয় মামুনসহ কয়েকজন নেতৃস্থানীয় লোকজন বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবু হানিফকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার সকাল ৮টায় উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের বাড়িতে সালিস বৈঠকের কথা ছিল। তবে বৈঠকে অভিযুক্ত আবু হানিফ এতে উপস্থিত না হয়ে উল্টো তাহমিনাকে দিয়ে শাশুরিসহ ৮ জনকে আসামি করে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অপর দিকে তাহমিনার শাশুরি বাদী হয়ে আবু হানিফ মাস্টার ও পুত্রবধূ তাহমিনাকে আসামি করে থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন। পরে উভয় পক্ষের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও রৌমারী থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল আহমেদ একইদিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে।


  • সিএসডিকের নির্বাহী পরিচালক পরকীয়ায় গিয়ে ধরা
  • রৌমারী থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ শাশুরি ও পুত্রবধূর

অভিযোগকারী আমির জান বলেন,আমার ছেলে মারা যাওয়ার পরে আমার ছেলের বউয়ের সাথে হানিফের প্রেমের সম্পর্ক হয়। তারা মাঝে মাঝে বাড়ীথেকে বেড়ানোর কথা বলে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। কিছু বললে আমার ছেলের বউ আমার সাথে খারাপ আচারণকরে আমি কিছুই বলি নাই কিন্তু তবে হানিফ যা করেছে আমি এর বিচার চাই।

অভিযোগকারী তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী মারা যাওয়ার আগে কিছু সম্পদ ও জমি বন্ধক রেখে যান। এই সম্পদ আমার মেয়ের নামে দিয়ে যান, এটা আমার শাশুরির সহ্য হয় না। এখন আমার স্বামীর অর্থ সম্পদ আত্মসাতের জন্য শ্বশুর বাড়ির লোকজন পায়তারা করছে। আমাকে বাড়িতে থেকে সড়ানোর জন্য অপবাদ দিচ্ছে তারা।’

সিএসডিকের নির্বাহী পরিচালক আবু হানিফ মাস্টার বলেন, ‘তাহমিনার স্বামী আমার এনজিওর সহকারী পরিচালক হিসেবে দীর্ঘ ২০ বছর সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। সেই থেকে তার পরিবাবের শোভাকাক্সক্ষী হিসেবে খোঁজ-খবর নিতে যেতাম। তাহমিনার শাশুরি তার সাথে দেখা করতে আমার মেয়ের জামাইয়ের কাছে খবর পাঠান। আমি তার কথায় দেখা করতে যাওয়া মাত্র তারা আমাকে আটকে দেয়। আমাকে নিয়ে ব অপপ্রচার চালান ও অভিযোগ দায়ের করে। আমি রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্তের শিকার।’

রৌমারী থানার ওসি (তদন্ত) মুশাহেদ খান পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এসআই জুয়েল আহমেদ ঘটনাস্থলে সরেজমিনে তদন্ত করছেন। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুড়িগ্রাম,রৌমারী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close