শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
শৈলকুপায় সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীদের বাইরে না থাকার নির্দেশ চেয়ারম্যানের
![](/assets/news_photos/2024/04/21/image-452673.jpg)
গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী সন্ধ্যার পর বাইরে থাকতে পারবে না। সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা বাড়ির বাইরে থাকলে সামাজিক শাসনের আওতায় আনা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু। এর প্রচারে গত শনিবার থেকে গ্রামে গ্রামে চলছে মাইকিং। তার এই ব্যতিক্রমী জনসচেতনামূলক প্রচারে খুশি এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিনই ভ্যানে মাইক ঝুলিয়ে ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে প্রচার। গ্রামের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের লক্ষ্য করে বলা হচ্ছে, ৭ নম্বর হাকিমপুর ইউনিয়নে প্রত্যেকটি গ্রামের যেসব ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তারা এখন থেকে সন্ধ্যার পর বাড়িতে বসে লেখাপড়া করবে। প্রয়োজন ব্যতীত কোনো স্কুলপড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী সন্ধ্যার পরে রাস্তাঘাটে, হাটে-বাজারে, অলিতে-গলিতে চায়ের দোকানে বসে, মোবাইলে গেম খেলা, একসঙ্গে বসে আড্ডা দেওয়া, ফেসবুক চালানো, ইমো মেসেঞ্জারে চ্যাটিং করা, অনলাইনে জুয়া খেলা ইত্যাদি কাজে জড়িত থাকতে পারবে না। এমন কাজে জড়িত থাকলে গ্রাম পুলিশ তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এমনকি তাদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধেও প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাড়িতে বসে পড়াশোনার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান ইকু শিকদার।
এভাবেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ায় এলাকায় প্রসংশায় ভাসছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
- চেয়ারম্যানের নির্দেশ প্রচারে গ্রামে গ্রামে চলছে মাইকিং
- নির্দেশ না মানলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি
- ব্যতিক্রমী জনসচেতনামূলক প্রচারে খুশি এলাকাবাসী
ইউনিয়নের মাদলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাইকিংয়ের থেকে আর কেউ সন্ধ্যার পর বাইরে থাকি না। এমনকি মোবাইলও দেখি না। সন্ধ্যার পর পরই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি।’
মাদলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘এখন ইউনিয়নের স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার পর আর মোবাইল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে না। চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগ নেওয়াতে খুশি। সেইসঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীরা উপকৃত হবে।’
হরিহরা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। আগের মতো আর ছাত্র-ছাত্রীরা সন্ধ্যার পর মোবাইল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে না।’
হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু বলেন, ‘মোবাইলের কারণে ছাত্র-ছাত্রীসহ যুবসমাজ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আমার এই জনসচেতনামূলক প্রচারের মাধ্যমে একজনও যদি সচেতন হয় তাহলে এই প্রচেষ্টাকে সার্থক মনে করব।’
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলামের মোবাইলে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
পিডিএস/জেডকে