যশোরের শার্শায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক ইকরামুল ইসলামের (২৮) ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় ইকরামুলকে রক্ষা করতে গিয়ে তার মেজ ভাই কমিরুজ্জামান কবির (৩৫) আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যার সময় শার্শা সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিকুল ইসলামকে আসামি করে শার্শা থানায় একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ইকরামুল।

হামলার পর আহত অবস্থায় ইকরামুল ইসলাম ও তার ভাই কমিরুজ্জামানকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ইকরামুল দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও স্থানীয় দৈনিক প্রজম্ম একাত্তর পত্রিকার শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি।

অভিযুক্ত আরিকুল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। তিনি উপজেলার চটকাপোতা গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলা আছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ মার্চ রাতে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্যদের অভিযানে একটি বিদেশী পিস্তল ও একটি ম্যাগাজিনসহ আটক করে জেলহাজতে যান আরিকুল। তবে জেল থেকে বেরিয়ে আবারও একই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন।

• সাংবাদিক ইকরামুলকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত তার মেজ ভাই।
• অভিযুক্ত আরিকুলের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলা আছে।
• হামলার ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হলেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামি

আরিকুল ইসলাম মাদক ও অস্ত্রসহ আটক হওয়া নিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একাধিকবার খবর প্রকাশ হয়। ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ের আড়ালে অবৈধ কারবারের এসব খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে। ওই সব ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক ইকরামুলের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন আরিকুল। এর আগেও সংবাদ প্রকাশের জেরে ইকরামুলকে কয়েকবার মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।

ইকরামুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান করছিলাম। এমন সময় পূর্ব শক্রতার জেরে আরিকুল ইসলাম হঠাৎ আমাকে গালিগালাজ করতে থাকে। তাকে নিষেধ করলে তিনি আমার ওপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি চড়, কিল-ঘুষি মারেন। খবর পেয়ে আমার মেজ ভাই আমাকে এগিয়ে এলে তাকেও এলোপাতাড়ি মারতে থাকে আরিকুল। এক পর্যায়ে একটি আধলা (ভাঙা) ইট দিয়ে আঘাত করে তার (কমিরুজ্জামান) কপাল ফাটিয়ে দেন। ঘটনা দেখে পথচারী ও স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পালিয়ে আরিকুল পালিয়ে যান।’

শর্শা থানা-পুলিশ জানিয়েছে, আরিকুলের বিরুদ্ধে শার্শা ও সাতক্ষীরা থানায় একাধিক অস্ত্র, মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মামলা রয়েছে। নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে এসব কার্যকলাপ চালিয়ে থাকেন।

মামলার তথ্য নিশ্চিত করে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, সাংবাদিক ইকরামুল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি মামলা নিয়েছে। আরিকুলকে গ্রেপ্তারের জন্য শার্শা থানা-পুলিশ ও ডিবি সদস্যরা চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হলেও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে পর্যন্ত আসামিকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

পিডিএস/আরডি