বগুড়ার নন্দীগ্রামে মসজিদের দানবাক্স থেকে দুইশো টাকা চুরির অপবাদে দুই কিশোরকে প্রকাশ্যে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সেই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।

সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমগীর হোসাইন আজম। এর আগে গত বুধবার নন্দীগ্রাম পৌরসভার নামুইট তিনমাথা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার দুই কিশোর হলেন উপজেলার তাঁরাটিয়া এলাকার মুর্শিদুল ও ভাটরা গ্রামের সুমন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, নামুইট তিনমাথা বাজারে ওয়াক্ত নতুন জামে মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা চুরির অভিযোগ তুলে দুই কিশোরকে রাস্তা থেকে ধরে আনে নামুইট গ্রামের মোড়ল নজরুল ও কাচু প্রামানিক। পরে গ্রামের কয়েকজন মোড়ল একত্রিত হয়ে দুই কিশোরকে রশি দিয়ে গাছে বেঁধে সালিশ বসায়। অমানবিক নির্যাতনের সময় গ্রাম্য মোড়লদের হাতে-পায়ে ধরেও রক্ষা পায়নি দুই কিশোর। এতিম মুর্শিদুলকে নির্যাতনের সময় তার ভিক্ষুক মা মোড়লদের পায়ে পড়ে কান্না করলেও সন্তানকে রক্ষা করতে পারেননি। তারা আহত হলেও চিকিৎসা করানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সড়কের মোড়ে নির্যাতনের সময় শতশত জনতা ভিড় করেন। কয়েকজন ব্যক্তি মারধর না করার অনুরোধ করলেও কাজ হয়নি।

নির্যাতনের শিকার সুমন জানায়, তারা বাবা-ছেলে অটোভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। সকালে দুই বন্ধু অটোভ্যান নিয়ে নন্দীগ্রাম শহরের দিকে যাচ্ছিলো। নামুইট মোড়ে ভ্যান থামানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে চোর বলে চিৎকার করে ওই গ্রামের মাতব্বর নজরুল। কয়েকজন মোড়ল ও স্থানীয় লোকজন যাচাই না করেই তাদের মারতে শুরু করে।

পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড নামুইটের সাবেক কাউন্সিলর রহমত আলী সহ গ্রাম্য মোড়লরা বলেন, মসজিদ থেকে মুসল্লিরা চলে যাওয়ার পর দুই কিশোর দানবাক্স থেকে টাকা চুরি করে। তাদের আটক করে শাসন করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি।

এদিকে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমগীর হোসাইন আজম বলেন, খবর পেয়েছি, চুরির অপবাদে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না।

পিডিএস/এস