reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

২০০ বই নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলেন নববধূ!

ছবি : সংগৃহীত

প্রযুক্তির প্রভাবে বইপ্রেমী মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমছে। বইয়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে ডিজিটাল ডিভাইস। এমনি সেই বইও মানুষ এখন মোবাইল কিংবা ট্যাব ব্যবহার করে পড়ছে। তবে এর ব্যতিক্রম ঘটনাও রয়েছে। তেমনি একজন মেহেরুন নেছা মুমু। যিনি বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে প্রায় ২০০ বই নিয়ে গেছেন। তার ইচ্ছে শ্বশুরবাড়িতে একটি পাঠাগার গড়ার। শাশুড়ির প্রতি ভালোবাসা স্বরূপ সেই পাঠাগারের নাম দিতে চান ‘বউ-শাশুড়ি বইঘর’। যেখানে পাঠক হবে এলাকার বউ-শাশুড়িসহ স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা।

মুমু চর ফলকন গ্রামের ডা. অবাদুল হক চেয়ারম্যান বাড়ির মহিউদ্দিনের মেয়ে। একই গ্রামের রমজান আলী মৌলভীবাড়ির মাকছুদুর রহমানের ছেলে তরুণ আইনজীবী এমরান হোসেন নিখিলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। মুমু ঢাকার ইডেন কলেজের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ছোটবেলা থেকেই তিনি বইপ্রেমী। স্বজনেরা বলেন, বই পড়তে মুমুর ভালো লাগে। বই সংগ্রহ ও পড়া তার শখ।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নববধূ মেহেরুন নেছা মুমু বাবার বাড়ি থেকে বই নিয়ে উপজেলার চর ফলকন গ্রামের শ্বশুরবাড়ি যান। বই ছাড়াও নানা পদের বাহারি পিঠা নিয়ে যান তিনি। পিঠা প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে দেন মুমুর শাশুড়ি কামরুন নাহার।

গত বছরের ১৮ আগস্ট বিয়ে হয় এই দম্পতির। তখন শুধু কাবিন হয়। গত শনিবার ছিল মুমুর বউভাতের আয়োজন। এর একদিন পরই শ্বশুরবাড়ি যান তিনি। মেহেরুন নেছা মুমু বলেন, ‘বই কেনা, বই পড়া আমার শখ। বই উপহার পেতে আমার ভালো লাগে। স্বপ্ন দেখছি, শ্বশুরবাড়িতে ‘বউ-শাশুড়ির বইঘর’ নামে একটি লাইব্রেরি গড়ব। এলাকার সব বউ-শাশুড়ি এখানে এসে বই পড়বেন।’

শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া বেশির ভাগই তার বিভিন্ন সময়ের জমানো টাকায় কেনা। অল্প কিছু বই জন্মদিনসহ বিভিন্ন দিবসের উপহার, কিছু বই স্কুল-কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া। প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের শতাধিক বই পড়েছেন মুমু।

মুমুর স্বামী অ্যাডভোকেট এমরান হোসেন নিখিল স্ত্রীর সঙ্গে করে আনা বইয়ের ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তাতে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

মুমুর মা ছালেহা বেগম বলেন, তার মেয়ের প্রিয় শখ বই পড়া। শাড়ি-চুড়ি, কসমেটিকসে তার আগ্রহ নেই। ছোটবেলা থেকেই টাকা জমিয়ে বই কেনা ছিল তার নেশা। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার সময় মেয়ের সংগ্রহে থাকা সব বই নিয়ে গেছে।

মুমুর শাশুড়ি কামরুন নাহার বলেন, ‘আমার দুই ছেলে, মেয়ে নেই। ছেলের সুবাদে একটা মেয়ে পেয়েছি। সে এই বাড়িতে আসার সময় অনেক বই নিয়ে আসে। তাতে আমি খুবই খুশি হয়েছি। এখন থেকে আমিও তাকে বই কিনে দেব।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নববধূ!,শ্বশুরবাড়ি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close