মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
নরসিংদীর মনোহরদী
কৃষি জমিতে অবৈধ সিসা তৈরির কারখানা, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য
নরসিংদীর মনোহরদীতে কৃষি জমিতে ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরির অবৈধ কারখানা গড়ে উঠেছে। উপজেলার চঙ্গভান্ডা-নোয়াদিয়া সড়কের পাশে এ কারখানার নির্গত ধোঁয়া আর রাসায়নিক পদার্থে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মনোহরদীর চঙ্গভান্ডা-নোয়াদিয়া সড়কের পাশে ফসলি জমি ভাড়া নিয়েছেন বগুড়ার শাহিন মিয়া নামে এক ব্যক্তি। সেখানে পুরাতন ব্যাটারি সংগ্রহ করে আগুনে পুড়িয়ে সিসা তৈরির কাজ করছেন ৭-৮ জন শ্রমিক। তাদের মধ্যে কেউ পুরানো ব্যাটারির উপরের অংশ তুলে ফেলছেন, আবার কেউ ব্যাটারির ভেতর থেকে সিসা জাতীয় ধাতব পদার্থ বের করছে। রাতে আরেকদল শ্রমিক সেগুলো মাটির গর্তে ফেলে পুড়িয়ে একটি ঘন পাত্রের রূপ দেয়। পরে সেই ঘন পাত্রগুলোকে বিভিন্ন বড় বড় ব্যাটারি তৈরি কারখানায় বিক্রয় করা হয়। এ কাজ করার সময় বাতাসে এসিডের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিনে ব্যাটারির অ্যাসিড মিশ্রিত সিসা ও প্লাস্টিক আলাদা করা হয়। রাতে ওই বিষাক্ত অ্যাসিড মিশ্রিত পুড়ানো হয়। এসময় অস্বাভাবিকভাবে নির্গত হয় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। ফলে জমির ধানও বিভিন্ন জাতের ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওই কারখানা বন্ধের দাবি তোলেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে সীসা তৈরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।
- নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের ধোঁয়ায় জমির ধান ও বিভিন্ন জাতের ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অভিযোগ।
- এই ধোঁয়ার কারণে মানুষের হার্ট, কিডনি ও ব্রেন আক্রান্ত হতে পারে জানান উপজলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম জানান, কয়েক মাস আগে এক লোক কৃষিজমিতে পুরোনো ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। দিনে পুরোনো ব্যাটারি সংগ্রহ করে সারারাত সেগুলো পুড়িয়ে সিসা বের করা হয়। এসিড ও পুরোনো ব্যাটারি পোড়ার কারণে ঝাঁজাল গন্ধে ভরে যায় গোটা এলাকা।
মনোহরদী উপজলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক এমদাদুল হক সোহেল চিকিৎসকরা জানান, সিসার ধোঁয়া মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিরূপ প্রভাব ফেলে প্রকৃতিতেও। এই ধোঁয়ার কারণে মানুষের হার্ট, কিডনি ও ব্রেন আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি রক্ত স্বল্পতারও সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এদিকে জানতে চাইলে সিসা কারখানার মালিক শাহিন মিয়া এ বিষয়ে বলেন, এটা বৈধ না। তবে এতে কোনো ক্ষতিও হয় না। সবাইকে ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা করতে হয়। মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাছিবা খান বলেন, বিষটি আমি শুনেছি। ওই অবৈধ কারখানা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিডিএস/এস