চাঁদপুরের মতলব উত্তরে দুর্বৃত্তের ছোঁড়া এসিড ঝলসে গেছে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা মা রাশেদা আক্তার (৫৫) ও মেয়ে মিলি আক্তার (২০) শরীর। এদের মধ্যে মেয়ে মিলি আক্তারের অবস্থা গুরুতর।

এ ঘটনায় সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মিলি আক্তারের বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সফিকুল ইসলাম মানিক নামে যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

এর আগে রবিবার রাত ১১টার উপজেলার সুজাতপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্বজনরা দুজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। এদের মধ্যে মিলি আক্তার আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার স্বামী মো. সায়েম প্রবাসে থাকেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার এক যুবক মিলি আক্তারকে বিয়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে অন্যখানে বিয়ের সুবাদে মিলি আক্তার স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করতেন। এর মধ্যে বাপের বাড়িতে বেড়াতে এলে রবিবার রাতে এমন এসিড সন্ত্রাসের শিকার হন তিনি ও তার মা।

এসিডদগ্ধদের স্বজন সাকিব হাসান জানান, রাতে মা ও মেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় কে বা কারা জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরে থেকে এসিড ছুঁড়ে মারে। পরে তাদের চিৎকারে বাড়ির অন্যরা ছুটে আসেন। পরে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, এসিডে মেয়ে মিলি আক্তারের মুখ, বুক, পিঠ ও ডান হাত এবং মা রাশেদা আক্তারের বাম হাত ও উরু ঝলসে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের দ্রুত ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, এসিড ছোড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রবিবার রাত ১টার দিকে সফিকুল ইসলাম মানিক নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ওসি শহীদ হোসেন জানান, আটক যুবক মিলি আক্তারের বিয়ের আগে উত্যক্ত করতো। তাই সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে।