এম এ লিতু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

অবসরেও প্রধান শিক্ষকের পাঠদান, সারাজীবনে ছুটি নিয়েছেন এক দিন 

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষক জীবনকে বিদায় জানালেও পাঠদানকে বিদায় জানাননি। সদ্য বিদায়ী এ প্রধান শিক্ষক চলতি মাসের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদ্যলয়টি থেকে অবসর গ্রহন করেন। অবসর গ্রহনের সময় তিনি জানতেন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট আছে। যে কারণে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে স্বেচ্ছাশ্রম শুরু করেছেন সাবেক এ প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন বিদ্যালয় শুরু হওয়ার পূর্বে নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম। এরপর বিদ্যালয়টির নিয়ম মেনে গণিত বিষয়ে পাঠদান করছেন তিনি।

জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষাকতা পেশাকে বেছে নেন সিরাজুল ইসলাম। এরপর এ পেশাকে ভালবেসেছেন নিজ সন্তানদের মতো। কর্মজীবনে ছুটি নিয়েছেন মাত্র এক দিন ।তার তত্বাবধানে থাকাকালীন সময়ে মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দুই বার উপজেলা পর্যায়ে পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি। সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ ইউনিয়ন পর্যায়ে ২৬ ইভেন্টের মধ্যে ২৩ ইভেন্টে পুরষ্কার পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নিজ কর্মস্থল সারা জীবন রক্ষাণাবেক্ষণ ও পরিপাটি করে রেখেছেন তিনি। অনেক সময় নিজ অর্থয়ানে প্রতিষ্ঠানের নানা উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। এ ছাড়া নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। সহকর্মীদের প্রশংসায় ভেসেছেন বারংবার। বিদ্যালয়টির কোন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে না আসলে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে সে শিক্ষার্থীর খোঁজ নিতেন। এখন বিদ্যালয়টিতে নিয়মিত ৩১৫ জন শিক্ষার্থী পাঠগ্রহন করছে।

বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া প্রতিভা দেবনাথ বলে, ‘স্যার আমাদের শুধু শিক্ষক না, তিনি আমাদের একজন ভাল বন্ধু। স্যারকে আমরা অনেক ভালবাসি।’

বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান অভিভাবক শারমিন আক্তার প্রতিবেদকে জানান, স্যারের মতো ভাল মানুষ আর হয় না। স্যার এ বিদ্যালয়ের সবকিছু পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তিনি স্যারের দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

অবসরে পাঠদান সাবেক প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রী ও বিদ্যালয় আমাকে সবসময় টানে। নিয়ম অনুযায়ী আমাকে বিদায় নিতে হয়েছে। তবে আমি আমৃত্যু শিক্ষার আলো ছড়াতে চাই।’

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঝিনাইদহ,কালীগঞ্জ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close