মাসুম বিল্লাহ, শালিখা (মাগুরা)
মাগুরার শালিখা
৬০ হাজার টাকায় শুরু, এখন কর্মচারীর বেতনই অর্ধলক্ষাধিক
মাগুরার শালিখার অভিজিৎ ঘোষ মাত্র ৬০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শঙ্খ-শাঁখার ব্যবসা শুরু করেন। একযুগ পেরোতে না পেরোতেই অভিজিৎ এখন স্বাবলম্বী। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এখন চারজন কর্মীর বেতনই ৬০ হাজার টাকার ওপরে। কর্মীদের বেতন ও আনুষঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে অভিজিতের নিজের আয় এখন অর্ধলক্ষাধিক টাকার ওপরে।
অভিজিৎ জেলার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া বাজারের পূজা শঙ্খ ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী।
জানা যায়, আর্থিক অনটনের কারণে মাধ্যমিকের গণ্ডি শেষ না করেই ২০০৭ সালে বাড়ি ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন অভিজিৎ। পরে সেখানে একটি গার্মেন্টসে কয়েক বছর কাজ করে ২০০৯ সালে নিজ জেলায় ফিরে আসেন। তারপর জেলার মা শঙ্খ ভান্ডারে কিছুদিন কাজ করে পরে নিজেই একটি শঙ্খ ভান্ডার শুরু করেন। যেখানে ভারত ও শ্রীলঙ্কা থেকে কড়ি শঙ্খ, জাজি শঙ্খ, ধনা শঙ্খ, কানাচানা শঙ্খ এবং পাটি শঙ্খসহ বিভিন্ন প্রকার শঙ্খমালা আমদানি করে তা থেকে ব্রেসলেট শাঁখা, স্বর্ণ কাটা শাঁখা, চূড় শাঁখা, বাউটি শাঁখা, টায়ার শাঁখা, পাথর সেটিং শাঁখাসহ নানা ডিজাইনের শাঁখা তৈরি করা হয় যা প্রতি জোড়া মান ভেদে ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত পাইকারি দরে বিক্রি করা হয়। বছর দু-একের মধ্যেই ব্যবসা থেকে কাক্সিক্ষত লাভ পেতে শুরু করেন তিনি। তারপর থেকে অভিজিৎকে আর পিছু তাকাতে হয়নি।
এখন তার আড়পাড়া ও মাগুরা মিলে দুটি প্রতিষ্ঠানে চলে শাঁখা বিক্রির কাজ। অভিজিতের শাঁখা এখন নিজ জেলা মাগুরার পাশাপাশি যশোর, নড়াইল, কুষ্টিয়া, কালিগঞ্জ, দিনাজপুর, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুরসহ পদ্মার এপার-ওপারের মোট ১০-১২টি জেলায় পাইকারি দরে বিক্রি হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অভিজিৎ ঘোষের ছোট্ট দোকানে দিনভর বিভিন্ন ডিজাইনের শাঁখা তৈরি করছেন তার কর্মচারীরা। কেউ শঙ্খের মালা কাটছেন, কেউ শাঁখার নকশা করছেন, কেউ শাঁখা নিয়ে ঘষাঘষি করছেন, কেউ শাঁখা প্যাকেট করে বিভিন্ন এলাকায় কুরিয়ার করছেন। পূজা শঙ্খ ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী অভিজিৎ ঘোষ জানান, তার শঙ্খ ভান্ডারে প্রতিদিন চারজন কর্মী কাজ করে। এখানে যে শাঁখা তৈরি করা হয় তা মাগুরা জেলাসহ পার্শ্ববর্তী ১২টি জেলায় পাইকারি ধরে বিক্রি করা হয়। তবে সহযোগিতা পেলে দোকানটাকে আরো বেশি বড় করে অর্ধশতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো যেত বলে জানান তিনি।
পিডিএস/আরডি