শেকৃবি প্রতিনিধি

  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

শেকৃবির ভেট সার্জনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালের চিকিৎসক (ভেটেরিনারি সার্জন) রূপ কুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপত্রে (প্রেসক্রিপশন) জন্য হাসপাতালের প্যাড থাকতেও বেসরকারি একটি ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার করেন। এ ছাড়া সেবাদানের জন্য নির্ধারিত ফির বেশি টাকা আদায়, স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন হিসেবে নিয়োগ পান ডা. রূপ কুমার। নিয়োগের পর থেকেই নানা পোষা প্রাণী ও গবাদিপশুর চিকিৎসা করে আসছেন রূপ কুমার। কিন্তু প্রেসক্রিপশনে ব্যবহার করছেন ‘ভেট অ্যান্ড পেট কেয়ার’ নামে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের প্যাড (ব্যবস্থাপত্র)। সেখানে চিকিৎসক রূপ কুমারের নাম, ফোন নাম্বার ও ক্লিনিকের ঠিকানা রাজধানীর লালমাটিয়া উল্লেখ করা।

হাসপাতালটির একাধিক ইন্টার্ন ভেট ডাক্তার ও সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন যাবত বেসরকারি ক্লিনিকটির সঙ্গে জড়িত। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃক নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে টিচিং হাসপাতালটিতে দেখা গেছে, গবাদিপশু (ছাগল) চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তি থেকে ভিজিট বাবদ নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা ও মাইনর সার্জারি খরচ বাবদ নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। কিন্তু অফিস আদেশ অনুযায়ী গবাদিপশু চিকিৎসায় রেজিষ্ট্রেশন (ভিজিট) বাবদ ব্যয় ৫০ টাকা ও মাইনর সার্জারি বাবদ ব্যয় ১০০ টাকা হওয়ার কথা।


  • নির্ধারিত ফি এর বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায়
  • হাসপাতালের নিজস্ব প্যাডের জায়গায় বেসরকারি ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার
  • হাসপাতাল থেকে নানা সরঞ্জামাদি না পাওয়ার দাবি ভেট সার্জনের
  • এ ছাড়া একটি বেসরকারি ক্লিনিক চালাচ্ছেন এএসভিএম অনুষদের ডিনসহ চারজন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এএসভিএম অনুষদের একাধিক শিক্ষক বলেন, সরকারি হাসপাতালে সেবা দেওয়ার একটা নির্ধারিত মূল্য তালিকা থাকে। এর বাইরে অতিরিক্ত ফি আদায় নিঃসন্দেহে একটি অনৈতিক কাজ।

বেসরকারি ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রূপ কুমার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে কোনো প্যাড দেওয়া হয়নি। তাই ব্যক্তিগত প্যাড ব্যবহার করছি।’ প্যাডে উল্লিখিত ক্লিনিকের মালিকানা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রথমে অনুষদের ডিন কে বি এম সাইফুল ইসলামের নাম উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে আবারো ফোন করে বলেন, এটি একটি চেম্বার। এর একক কোনো মালিকানা নেই। সাইফুল স্যারসহ আমরা চারজন মিলে চেম্বারটি চালাই।

আদায় করা ফি সম্পর্কে জানতে চাইলে রূপ কুমার বলেন, যেহেতু হাসপাতাল থেকে গ্লাভস ও অন্য সরঞ্জামাদি দেওয়া হয় না তাই এসবের দাম হিসেবে নির্ধারিত ফি থেকে কিছু বেশি আদায় করা হয়। আর সার্জারির জন্য আলাদা ফি ও ওষুধের জন্য তার দাম রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

এএসভিএম অনুষদের ডিন অধ্যাপক কে বি এম সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, হাসপাতালের সরঞ্জামাদির জন্য আমরা দুবার চাহিদাপত্র দিয়েছি। কিন্তু এখনো পাইনি। হাসপাতালের প্যাড তৈরির জন্য একটি কমিটি কাজ করছে। তাই সাময়িকভাবে রূপ কুমার ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার করে থাকতে পারে।

ক্লিনিকটির মালিকানা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সেখানে আমরা কয়েকজন ডাক্তার বসি।’ অতিরিক্ত ফি আদায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০২০ সালের একটি তালিকা নির্ধারণ করা আছে তবে কমিটি নতুন ফি নির্ধারণের জন্য কাজ করছে বলে জানান তিনি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শেকৃবি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close