কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

  ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

কুষ্টিয়ায় রেখা হত্যাকাণ্ড

ব্যাংকের গাড়ি ব্যবহার করেই শ্যালিকাকে অপহরণ, হত্যা

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

কুষ্টিয়ায় বিয়ের কেনাকাটার কথা বলে ব্যাংকের মাইক্রোতে কলেজ ছাত্রী রেখা খাতুনকে অপহরণ করেন তার বড় ভগ্নিপতি (দুলাভাই) গাড়িচালক আওলাদ হোসেন (৪৫)। পরে ব্যাংকের ভাড়া করা গ্যারেজে গাড়িসহ তাকে বন্দি রেখে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন তিনি। এতে রাজি না হওয়ায় রেখাকে হত্যার পর একটি ভাগাড়ের সামনে তার মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়।

জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার আওলাদ হোসেন শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দায় স্বীকার করে আদালতে দেওয়া বক্তব্যে হত্যাকাণ্ডের এই মোটিভ উঠে এসেছে। তিনি রূপালী ব্যাংক কুষ্টিয়া জোনাল অফিসের গাড়িচালক।

এর আগে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) কুষ্টিয়ার হাউজিং এলাকায় পৌর ভাগার থেকে কুমারখালী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী রেখা খাতুনের কম্বলে মোড়ানো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনা কুষ্টিয়া মডেল থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন তার বাবা আব্দুর রহিম ব্যাপারী। তিনি জেলার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের দড়ি বাখই গ্রামের বাসিন্দা।


  • বিয়ের কেনাকাটার কথা বলে কলেজ থেকে শ্যালিকাকে তুলে নিয়ে গ্যারেজ বন্দি।
  • কু-প্রস্তাবে’ রাজি না হওয়ায় হত্যার পর পৌরসভার এক ভাগাড়ে ফেলা হয় লাশ।

কুষ্টিয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আওলাদ হোসেন গত শনিবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ মোস্তাফিজুর রহমানের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এতে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে বিস্তারিত বিবরণ দেন।

স্বীকারোক্তিতে আওলাদ হোসেন বলেন, বুধবার সাড়ে ১২টার দিকে ফোনে ডেকে রেখাকে বিয়ের কিছু কেনাকাটা করে দেওয়ার কথা বলে কলেজ থেকে মাইক্রোতে তুলে নেন আওলাদ। কুষ্টিয়া হাইস্কুল চত্বরে ভাড়া করা গ্যারেজে রেখাকে সহ মাইক্রো রেখে ব্যাংকে গিয়ে গাড়ি মেরামতের একটি বিল-ভাউচার জমা দেন। সেখান থেকে ফিরে গাড়িতে রেখাকে কু-প্রস্তাব দিলে রাজি না হওয়ায় তাকে শ^াসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রেখার মরদেহ কম্বলে পেঁচিয়ে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ি সড়কের কালভার্ট সংলগ্ন পৌর ভাগাড়ের সামনে ফেলে দেন তিনি। ফেরার পথে রেখার ব্যবহৃত ভ্যানিটি ব্যাগটি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহ সড়কে মজমপুর এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়।

আওলাদ হোসেনের কর্মস্থল রূপালী ব্যাংকে কুষ্টিয়া জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আওলাদ হোসেন গাড়ি সার্ভিসিংয়ের কথা বলে অফিস থেকে বেড়িয়ে যান। পরে ২টার দিকে এসে গাড়ি সার্ভিসিংয়ের বিল ভাউচার জমা দেন। মাগরিরেব আজানের পূর্ব পর্যন্ত তিনি কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে আমার কাছে সঠিক কোনো তথ্য নেই।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কলেজ ছাত্রী রেখা খাতুন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাইক্রোসহ আনুষঙ্গিক আলামত জব্দ করা হয়েছে। তবে রেখা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা ছাড়াও কোন নির্যাতন চালানো হয়েছিলো কি না, সে বিষয়ে ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে পেলে বলতে পারব।’ এই হত্যাকান্ডে আরো কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুষ্টিয়া,হত্যা,ব্যাংকের গাড়ি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close