মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

মহাদেবপুরে ভূয়া প্রকল্প

কাজ সম্পন্ন না করেই বরাদ্দের অর্থ উত্তোলন

নওগাঁর মহাদেবপুরে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে বরাদ্দ হলেও কলেজ রোড পাইকড়ের গাছ-নজরুল বাবুর বাড়ি সড়কটি বেহাল।ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

নওগাঁর মহাদেবপুরে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে দুটি প্রকল্পের রাস্তা সংস্কারে বরাদ্দ হলেও কোনো উন্নতি হয়নি অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

মহাদেবপুর সদর ইউপি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় উপজেলার নাটশাল গ্রামে নাটশাল বটতলীর পাকা রাস্তা হতে আনোয়ারের মিল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার ও উপজেলা সদরের কলেজপাড়া এলাকায় মহাদেবপুর কলেজ রোড পাইকড়ের গাছ হতে ব্র্যাক অফিস হয়ে নজরুল বাবুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার নামে পৃথক দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর একটিতে পাঁচ টন চাল ও অন্যটিতে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মহাদেবপুর সদর ইউপি সদস্য শিহাব রায়হান ও জান্নাতুল ফেরদৌসী। কাগজে-কলমে শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য ও অর্থ উত্তোলন করেছে পিআইসির সভাপতি ও সম্পাদক।

নাটশাল গ্রামের নরেশ পাল (৬০) বলেন, গত ১৫ বছর আগে একবার এই সড়কে মাটি কাটার কাজ হয়েছিল। এরপর আর সংস্কার তো দূরের কথা; এক কোঁদাল মাটি পর্যন্ত খোঁড়া হয়নি।’ প্রকল্পের কাজ হতে দেখেননি বলে নিশ্চিত করেছেন নাটশাল গ্রামের মকলেছার, খলিল, আজিজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলামসহ অনেকেই।


  • কাগজে-কলমে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হলেও বাস্তবে হয়নি কিছুই।
  • কাজ সম্পন্ন না করেই বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য ও অর্থ উত্তোলন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, একই অর্থ বছরে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়নকৃত ‘মহাদেবপুর কলেজ রোড পাইকড়ের গাছ হতে ব্র্যাক অফিস হয়ে নজরুল বাবুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ কাজের কোনোই অস্তিত্ব মেলেনি। ওই এলাকার মনি মালা, আব্দুল জব্বার, অনিতাসহ স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত কয়েক বছর থেকে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি। এটি এখন চলাচলের অযোগ্য।

এদিকে জানা গেছে, কিন্তু গত জুনে কাগজে-কলমে প্রকল্প দুটি শতভাগ সম্পন্ন বলে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কাজ না করেই নামসর্বস্ব শ্রমিকের তালিকা তৈরি করে ভূয়াভাবে বরাদ্দের অর্থ ও খাদ্যশস্য পরিশোধ করেছে সংশ্লিষ্টরা। এটিকে দুর্নীতির বহুল প্রচলিত কৌশল হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও মহাদেবপুর সদর ইউপি সদস্য শিহাব রায়হানকে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি প্রতিবেদককে দেখা করতে বলেন।

অস্তিত্বহীন ওই দুটি প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ ও খাদ্যশস্য আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুলতান হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনিও কৌশলে এড়িয়ে যান।

মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহাগের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে প্রতিবেদককে অফিসে দেখা করতে বলেন তিনি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নওগাঁ,মহাদেবপুর,ভূয়া প্রকল্প
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close