শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি

  ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

শিবগঞ্জ মহাস্থানহাট

হাত বদলে সবজির দাম দ্বিগুণ, কৃষকের সঙ্গে ঠকছে ক্রেতা

বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান হাটে সবজির পাইকারি বিকিকিনি। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থানহাট শীতের সবজিতে সরগরম হয়ে উঠেছে। হাটে কৃষকের হাত বদলে যেতেই দাম বেড়ে যাচ্ছে দুই থেকে তিন গুণ। এতে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বতভোগীরা। বাড়তি দামের ভোগান্তিতে পড়ছে ক্রেতারা। ক্রেতাদের অভিযোগ, মধ্যস্বত্বভোগীদের অতিরিক্ত লাভের কারণেই সবজি কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে তাদের।

মহাস্থানহাটে প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় সবজির পাইকারি বাজার। এখানে আলু, বেগুন, ফুল কপি, পটল, করলা, পেঁপে, ঝিঙা, লাউ, মুলা, কঁচু, শসাসহ সব ধরনের সবজি পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা হয়।

বিভিন্ন বাজার ঘরে ঘুরে দেখা গেছে, মহাস্থানহাটের এক স্থানে নতুন পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। এর থেকে ১০০ গজ দূরে একই পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা। মহাস্থানহাট থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে মোকামতলা বাজারে একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। সেখানে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। একই বেগুন অন্যহাটে ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে ফুলকপি প্রতিটি একটি বাজারে ১০ টাকা, হলেও অন্য বাজারে ২০-৩০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। এভাবে হাত ঘুরে ও বাজারে ভেদে প্রত্যেকটি সবজি কেজি প্রতি ১৫-২০ কখনো বা ৩০-৪০ টাকা বেড়ে যায়।


  • হরতাল-অবরোধ, পরিবহন খরচ, শ্রমিক ও হাটবাজারের খাজনার কারণে অন্য জেলায় সবজি পাঠাতে বাড়তি খরচ
  • কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বতভোগীরা।
  • গত বছর হাট থেকে প্রায় চার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়।

মহাস্থানহাটে দেখা গেছে, বিশাল জায়গা মৌসুমি শীতের সবজিতে ঠাসা। কৃষক অটোভ্যান, ভটভটি, অটোরিকশায় করে সবজি এনে হাটে নামাচ্ছেন। সাধারণ ক্রেতা ছাড়াও হাটে পাইকারদের ভিড়। কৃষকের কাছ থেকে ভালো সবজি কিনে পাইকাররা হাটের এক পাশে জড়ো করছেন। এরপর থরে থরে ট্রাকে সাজানো হচ্ছে। গন্তব্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বাজারের আড়তদাররা জানান, ভরা মৌসুমে মহাস্থান থেকে প্রতিদিন সবজি বোঝাই ৬০-৭০টি ট্রাক রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, পরিবহন খরচ, হরতাল অবরোধ, শ্রমিক ও হাটবাজারের খাজনার কারণে অন্য জেলায় সবজি পাঠাতে তাদের খরচ যোগ হয়। এ কারণে সেখানে দাম বেড়ে যায়।

মহাস্থান হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, এই হাটে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার কেনাবেচা হয়। হাটকেন্দ্রিক যানজট ও অনাকাক্সিক্ষত ঝামেলা এড়াতে কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে। এই হাট শীতকালে সবজিতে ভরে যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিত সরকার বলেন, এই এলাকার মাটি খুবই উর্বর, সব ফসল সব আবহাওয়ায় মানিয়ে নেয়। এবার উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আকতার বলেন, গত বছর প্রায় চার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। আমরা নিয়মিত বাজার তদারকি করে আসছি। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা আছে। তবে ব্যবসায়ীদের অসচেতনতার কারণে ড্রেনগুলো ময়লায় অকেজো হয়ে যাচ্ছে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বগুড়া,শিবগঞ্জ,ঠকছে ক্রেতা,ঠকছে কৃষক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close