ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির দীর্ঘ ২০ বছরের প্রধান কার্যালয় এখন নৌকার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় (ক্যাম্প) হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সেখানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রধান কার্যালয় লেখা একটি সাইনবোর্ড উঠনো হয়।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজাপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহিম হোসেন ও বর্তমান রাজাপুর শহর ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি মো. রমজান মৃধা ওই সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন।

দক্ষিণ অঞ্চলের বিএনপির দূর্গ খ্যাত হতো ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসন। এই আসন থেকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। এর মধ্যে বিএনপি জোট সরকারের সময় একবার আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পারন করেন।

এদিকে শাহজাহান ওমর মালিকানাধীন রাজাপুর বাইপাস মোড় সড়কের পাশে দুতলা বিশিষ্ট একটি ভবনে ২০০৩ সাল থেকে উপজেলা বিএনপির স্থায়ী প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু গত ৩০ নভেম্বর শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন নেয়। পরে তার মালিকানাধীন ভবন থেকে বিএনপির সব সাইনবোর্ড ব্যানার সরিয়ে ফেলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সেখানে নৌকার নর্বাচনী সাইনবোর্ড উঠানো হয়।

এদিকে ২০ বছরের বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় করায় উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

জানতে চাইলে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করা ভবনটি শাহজাহান ওমরের ব্যক্তিগত জায়গার ওপরে নিজের অর্থে নির্মাণ করা। এতদিন তিনি বিএনপিতে ছিলেন, তাই সেখান থেকে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। তিনি এখন আওয়ামী লীগে গেছেন, তাই সেখানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এখনে আমাদের কিছু বলার নাই।’

তবে রাজাপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এইচ এম খায়রুল আলম সরফরাজ বলেন, ‘তিনি (শাহজাহান ওমর) যখন ঝালকাঠিতে আসছেন, তখন আমাকে বলছেনÑতার ওই অফিস রাজাপুর আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে হিসেবে ব্যবহার করবেন। তখন তাকে বলছি, রাজাপুরে আওয়ামী লীগের অফিস আছে, আপনি নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ব্যাবহার করতে পারেন।’

দীর্ঘ ২০ বছর বিএনপির প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত ভবন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার প্রসঙ্গে খায়রুল আলম সরফরাজ বলেন, ‘ওখানে যাব কি যাব না, সেটা পরে দেখা যাবে।’

বিষয়টি নিয়ে জানার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার মোহাম্মদ শাহজাহান ওমরের (বীর উত্তম) ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে গতকাল বুধবার একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পিডিএস/জেডকে