আব্দুর রহমান রাসেল, রংপুর ব্যুরো

  ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

ভবনের ছাড়পত্র না দেওয়ায়

রংপুরে মাদরাসার প্রধান ফটকে তালা লাগালো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের স্বামী পীরগঞ্জ পিআইও

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

রংপুরে ছাড়পত্র না দেওয়ার অভিযোগ এনে একটি মাদরাসার প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে সিলগালা লিখে দিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এতে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকের স্বামী পীরগঞ্জের পিআইও হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বেশ কিছু কাজ বাকি রেখেই ছাড়পত্রের জন্য চাপ দিচ্ছিল। আর ওই পিআইওর দাবি, হ্যান্ডওভার নিয়েও ছাড়পত্র না দেওয়ায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের লোকজন সেখানে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তরফশাদি খাইরুল উলুম দাখিল মাদরাসায় শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ তিন কোটি টাকা ব্যায়ে চারতলা ভবন নির্মান করে। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে মাদরাসাটির সুপার মাওলানা আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে ছাড়পত্র না দেওয়ার অভিযোগ এনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পীরগঞ্জ উপজেলা পিআইও এর মালিকানাধীন জেসমিন ট্রেড্রার্সের লোকজন এসে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। সেখানে লিখে দেয় সিলগালা। এতে মাদরাসাটির শিক্ষাসহ সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা এসেও প্রবেশ করতে পারেনি। এ ঘটনায় হতভম্ব শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়রা।

মাদরাসা সুপার মাওলানা আক্কাস আলী জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জেসমিন ট্রেডার্সের মালিক রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা ইউএনও কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপানা কির্মকর্তা মিজানুর রহমান অশোভনভাবে কাজ সমাপ্ত না করেই আমার কাছে ছাড়পত্র চায়। আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছাড়পত্র নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি দেইনি। আমি ছাড়পত্র দেইনি, কারণ আইপিএস কমপ্লিট নাই, প্রাচীর ভেঙে গেছে। এসব কম্পলিট করে আপনারা সই নেন। কিন্তু তারা ইউএনওর কাছেও অভিযোগ করেছিল। তখন আমি ইউএনও স্যারের কাছে বিষয়গুলো বলি। তিনি আমাকে বলেন, সব কাজ সম্পন্ন করার পরই ছাড়পত্র দিবেন। যেহেতু তিনি আমার মাদরাসার সভাপতি সে কারণে আমি সব কাজ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত ছাড়পত্র না দিতে অটল থাকি। এরই মধ্যে তারা এসে মাদরাসার প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে সিলগালা লিখে চলে গেছে। এরপর আমি বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করেছে।

তিনি আরও বলেন, একজন পিআইও উচ্চ শিক্ষিত মানুষ। তারপরেও তিনি যেভাবে আমার সঙ্গে জোড় করে কাজ সমাপ্ত না করেই ছাড়পত্রের জন্য চাপাচাপি করছেন। এটাতে আমি হতভম্ব হয়েছি। এ ঘটনার সুস্ঠু বিচার চান তিনি।

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা পিআইও মিজানুর রহমান জানান, আমাদের কাছ থেকে বিল্ডিংটি দেড়মাস আগে ইঞ্জিনিয়াররা হ্যান্ড ওভার নিয়েছে। সব কিছুই কমপ্লিট। ওনারা বিল্ডিংয়ে উঠেছে। ক্লাশ করতেছে। কিন্তু অফিসিয়ালি শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছ থেকে ওনারা বিল্ডিং বুঝে নেননি। এ কারণে নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস থেকে হয়তো সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওনারা সাড়া দেননি। সে কারণে হয়তো নির্বাহী প্রকৌশল অফিসের লোকজন এসে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে স্ত্রীর নামে ঠিাকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে চাননি। বিষয়টি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জেনে নেওয়ার জন্য বলেন তিনি।

এ ব্যাপরে রংপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কথা বলার চেস্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

পিডিএস/এএমকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভবনের ছাড়পত্র,ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান,প্রধান ফটকে তালা,রংপুর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close