আবদুর রাকিব, নওগাঁ

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

নওগাঁয় শীতজনিত রোগী বেড়েছে

শীতজনিত রোগী বাড়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার-নার্সরা। ছবিটি নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল থেকে তোলা।-প্রতিদিনের সংবাদ

নওগাঁয় শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভিড় জমিয়েছে জেলার হাসপাতালগুলোতে। গত কদিনে স্বাভাবিকের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালের সিকিৎসক ও নার্সরা। তারওপর হাসপাতালগুলোতে স্যালাইনের সংকট থাকায় রোগীদের ভোগান্তি যেন চরমে পৌঁছেছে। অতিরিক্ত মূল্যে বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ সেবাপ্রত্যাশীদের।

সরেজমিনে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতলে দেখা যায়, শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালে বেড সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে বাধ্য হয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকেই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ১৫-২০ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এছাড়া, আউটডোরে শীতজনিত রোগে প্রতিদিনই ১০০-১৫০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতাল থেকে অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ করা হলেও স্যালাইনের স্বল্পতা রয়েছে। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে জনবল ও সরকারি বরাদ্দ রয়েছে ১০০ শয্যার। যার ফলে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ভর্তি রয়েছে ২৩০ জন রোগী। হাসপাতালের পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা ১২টি হলেও ভর্তি রয়েছে ৫৪ জন। ষষ্ঠ তলায় মেডিসিন (নারী) ওয়ার্ডে ২৬টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৮ জন এবং সপ্তম তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে ২৫ বেডে ৬৫ জন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার পরও বেড সংকুলান না হওয়ায় অনেকে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।


  • রোগীর সংখ্যা বাড়ায় বেড সংকট
  • অতিরিক্ত মূল্যে স্যালাইন বাইরে থেকে কেনার অভিযোগ
  • ২৫০-এর জায়গায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে বরাদ্দ ১০০ শয্যা

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রাণীনগর উপজেলার মুঞ্জুরুল আলম বলেন, গত দুই দিন আমি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে রোগীর অনেক চাপ। জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে মেঝেতে শুয়েই চিকিৎসা নিচ্ছি। নার্স ও ডাক্তারের সংখ্যাও কম, সঠিকভাবে রোগীদের সেবা করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। তার ওপরে আবার হাসপাতালে স্যালাইন নাই বাইরে থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে।

নওগাঁ এলাকা থেকে আসা আরেক সেবাপ্রত্যাশী বলেন, আমার ছেলে হঠাৎ করে গতরাত থেকে প্রচুর বমি আর পাতলা পায়খানা করতে শুরু করে। সকালে তাকে হাসপাতলে ভর্তি করিয়েছি। হাসপাতাল শীতজনিত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। যার ফলে চিকিৎসাসেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া, সব ধরনের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না হাসপাতালে। তাই বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।

নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, শীতজনিত কারণে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তাদের সবসময় গরম পরিবেশে রাখতে হবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য সবসময় গরম খাবার খেতে হবে। কোনো সময় ঠান্ডা বা পচা ও বাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না। রোগ থেকে শিশুদের রক্ষায় অভিভাবকদের সচেতন করা হচ্ছে। বর্তমান হাসপাতালে রোগীদের অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ করা হলেও স্যালাইনের কিছুটা স্বল্পতা রয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় সব ওষুধ খুব দ্রুত হাসপাতালে এসে পৌঁছবে বলেও জানান তিনি।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নওগাঁ,জেনারেল হাসপাতাল,রোগী,শীত,সংকট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close