এম এ লিতু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

  ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

কালীগঞ্জে হরতাল-অবরোধে দাম পাচ্ছেন না ফুলচাষিরা

হরতাল-অবরোধে দাম পাচ্ছেন না কালীগঞ্জের ফুলচাষিরা।-প্রতিদিনের সংবাদ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কদিন আগেও ফুলচাষিরা গাঁদা ফুলের প্রতি ঝোপা বিক্রি করেছেন ১৫০ টাকায়। এখন বিক্রি করছেন ২৫ থেকে ৩০ টাকা। ফুলচাষিরা বলছেন, হরতাল আর অবরোধে একদম দাম পাচ্ছি না।উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হয় জারবেরা গ্যালোডিয়াস, চন্দ্র মল্লিকা, গোলাপ,গাদাফুল ও লিলিয়াম ফুল।চাষিরা তাদের জমিতে গড়ে তুলেছেন দৃষ্টি নন্দন এসব ফুলের বাগান। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানেও পাঠানো হচ্ছে এসব ফুল। বিশেষ করে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২১ ফেব্রুয়ারি, পহেলা ফাল্গুন ও বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন দিবসে প্রায় কোটি টাকার ফুল বিক্রি করা হয় এ উপজেলা থেকে। বিকেল হলেই এ গ্রামে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান ছবি তুলতে। ছবি তোলার পর তারা পছন্দের ফুল কিনে থাকেন।সারা বছর ফুলের দাম কম বেশি হলেও এখন দেশে চলমান হরতাল অবরোধে উপজেলার ফুলচাষিরা পড়েছেন বিপাকে। গাঁদা ফুলের ঝোপা অক্টোবররের শুরুতে যেখানে চাষিরা বিক্রয় করেছেন ১৫০ টাকা করে সেখানে এ ফুলের ঝোপা এখন ২৫-৩০ টাকা। বিদেশি গ্যালোডিয়াস ও লিলিয়ামের দামও অর্ধেকে এসে নেমেছে। জারবেরা ফুলচাষিদেরও মাথায় হাত, প্রতিপিস জারবেরা ৮-১০ টাকা করে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২-৩ টাকা প্রতিপিস। গোলাপ ফুল আগের ৮-১০ টাকা দাম হারিয়ে এখন ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।


  • ২৫৪ একর জমিতে ফুলচাষ হয়েছে
  • ১৫০ টাকার ফুল বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়

২০১৬ সালে জারবেরা ফুলচাষ শুরু করেন উপজেলার ত্রিলোচানপুর গ্রামের টিপু সুলতান। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি জারবেরা ফুল প্রতিমাসে যে পরিমাণ বিক্রয় করতাম এখন তা অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে। এক বিঘা বাগান করতে লাখ টাকা খরচ হয়। আর গাছ ফুল দেয় তিন বছর। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমি গাছের পরিচর্যাও করতে পারবো না। বাধ্য হয়ে আমাকে বাগান কাটতে হবে।

আরেক ফুলচাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে গাঁদা গোলাপসহ বিভিন্ন জাতের ফুলচাষ করেছি। মহামারি করোনার সময় ফুলের ব্যবসায় ধস নেমেছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু হরতাল অবরোধের কারণে আবার ফুলের ব্যবসায় ধস নেমেছে। এখন একদমই দাম পাচ্ছি না।

কালীগঞ্জের ফুল ব্যবসায়ী আলম আশরাফ বলেন, পরিবহন সমস্যায় ফুল কেনা যাচ্ছে না। ফুল সঠিক সময়ে না পৌঁছাতে পারলে লোকসান হয়। বাধ্য হয়েই ফুল কেনা কম করেছি।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজগর আলী জানান, দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে ফুলচাষে যশোরের গদখালীর পরই দ্বিতীয় অবস্থানে ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাঁদা ফুলচাষ হয় ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জে। চলতি বছরেও এ জেলায় ২৫৪ একর জমিতে ফুলচাষ হয়েছে।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঝিনাইদহ,কালীগঞ্জ,ফুল,ফুলচাষি,টাকা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close