গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০২ ডিসেম্বর, ২০২৩

শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলজুড়ে চলছে বিনা চাষে রসুন আবাদ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলজুড়ে চলছে বিনা চাষে রসুন চাষ। এখন এই এলাকার চাষিরা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। রসুন চাষে যেন তাদের দম ফেলার সময় নেই। কোনো রকম হালচাষ ছাড়াই রসুন বোপণ করছেন তারা।

জানা যায়, চলন বিলের সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর জেলার চলনবিল এলাকাভুক্ত উপজেলাগুলোতে প্রায় প্রতিবছরই বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আর এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই ফাঁকা জমিতে বিনাচাষে রসুন বোপণের ধুম পড়েছে চলনবিল এলাকার উপজেলাগুলোতে। চলনবিল এলাকার অর্থকরী ফসল হিসাবে বিনা চাষে রসুনের ভালো ফলনের কারণে প্রতি বছরই এই এলাকার কৃষকরা বিনাচাষে রসুনের বপণ করেন।

বিলের যত দুর চোখ যায় নারী-পুরুষ ও পাশাপাশি ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও মিলে জমিতে লাইন ধরে বসে বসে রসুনের কোয়া বোপণ করছেন। কৃষক সূত্রে জানা যায় কার্তিক অগ্রাহায়ন মাসে বিল থেকে পানি নেমে গেলে পলি জমা কাদা মাটিতে বিনা চাষে সারিবদ্ধভাবে রসুনের কোয়া রোপণ করা হয়। রোপণ শেষে রোপনকৃত রসুনের উপর দিয়ে ধানের নাড়া (খড়) বিছিয়ে দেওয়া হয়।এর পর প্রয়োজন মতো সার প্রয়োগ করা হয়। বোপণের ৯৫/১০০ দিন পর রসুন উত্তোলনের করা যায়।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবছর ৪৭৫ হেক্টর জমিতে রসুন চাষের লক্ষমাত্রানির্ধারণ করা হয়েছে। ইততোমধ্যেই প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে রসুন বোপন করা হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামের কৃষক জুড়ান আলী জানান, বিনা চাষে রসুন চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবছর তিনি ৭ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছেন।

একই গ্রামের হবিবর জানান, প্রতি বছরই এই বিলে বন্যায় ধানের ক্ষতি হয় আর এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা কম খরচে রসুন আবাদ করি। তিনি জানান এবছর ১৫ বিঘা জমিতে রসুনের আবাদ করব আশা করছি ভালো ফলন পাবো।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই এলাকার কৃষকরা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রতি বছরই রসুনের চাষ করে থাকে। এই রসুন চাষ করলে জমিতে হাল চাষ করতে হয়না। এ ছাড়া বোনা আমন ধানের খড় দিয়ে বোনা রসুনগুলো ঢেকে দেওয়া হয়, এতে কৃষকের বাড়তি কোনো খরচ হয় না। ফলে কৃষকরা লাভবান হন।

এব্যপারে স্থানীয় কৃষিবিভাগ থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়াসহ রসুন চাষে তাদের উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রতি হেক্টর জমিতে ৭.৮৯ মেট্রিকটন রসুন উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এতে কৃষকদের মাঝেও ব্যাপক সারা মিলছে ।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারো চলনবিল এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিনাচাষে রসুন চাষাবাদ করছে কৃষকেরা। বিল এলাকার বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁদা মাটিতে এ রসুন বোপণ করা হচ্ছে। আবাহাওয়া অনূকুলে থাকলে এবারো রসুনের বাম্পার ফলন হবে।

পিডিএস/এএমকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রসুন আবাদ,চলনবিল,শস্যভাণ্ডার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close