বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিদ্যালয় মাঠে হাট বসায় পাঠদান ব্যাহত

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

নওগাঁর বদলগাছীর ভান্ডারপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও ভান্ডারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বসে কাঁচামালের হাট। সপ্তাহে দুই দিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার দিন হাটে আসা হাটের লোকজনের ভিরের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে হয়। হাটের লোকজনদের চিল্লাচিল্লিতে দুটি বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। আবার পাঠদানের ফাঁকে শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা করতে পারে না।

দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অভিযোগ, ভান্ডারপুর হাটের নির্ধারিত জায়গা থাকার পর বিদ্যালয় মাঠে কাঁচামালের হাট বসছে। বিদ্যালয় মাঠে হাট না বসাতে ইজারাদারকে বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু কথা শুনছেন না ইজারাদার।

বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসানোর বন্ধ করতে ইতিপূর্বে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেও কোনো কাজ হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছে বারবার বলার পরও কাজ না হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভান্ডারপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও ভান্ডারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একই মাঠ। বিদ্যালয়ের মূল ফটকের পাশে কাঁচামালের বিশাল হাট বসেছে। স্কুল মাঠের ভেতর কয়েকটি ট্রাকও রয়েছে। মাঠের ভেতর চা এবং সিগারেট বিড়ির দোকানও রয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, হাটের নির্ধারিত জায়গা থাকার পরও প্রতি সপ্তাহে দুই দিন বিদ্যালয় মাঠে সকাল থেকে হাট বসে। আজও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ওই দুই দিন হাটের লোকজনদের ঠেলে তাদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়। বিদ্যালয় মাঠে হাট বসায় স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধূলা করতে পারে না। বিদ্যালয় মাঠে হাট বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসন, হাট ইজারাদারের লোকজন এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েও কাজ হয়নি।

নবম ও দশম শ্রেণির দুই জন শিক্ষার্থী বলেন, ‘হাটের দিনে ঠিকমতো পাঠদান হয় না। আমরা বিদ্যালয় মাঠে খেলতে পারি না। আমাদের বিদ্যালয় মাঠে হাট বসা বন্ধ করতে শিক্ষকদের বলেছি কিন্তু হাট বন্ধ হয় না।’

ভান্ডারপুর দ্বি-মুখী উচ্চিবদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক বকুল হোসেন বলেন, ‘আমি এখানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের অনেক আগে থেকেই বিদ্যালয় মাঠে হাট বসছে। সপ্তাহে দুই দিন বিদ্যালয় মাঠে হাট বসায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশে প্রভাব পড়ছে। আমরা চেষ্টা করেও বিদ্যালয় মাঠে হাট বসানো বন্ধ করতে পারিনি।’ ভান্ডারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. তাহমিনা খাতুন বলেন, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সমস্যা বেশি হয়। আমরা বিষয়টি অনেক আগেই উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, সপ্তাহে দুদিন বিদ্যালয়ের মাঠে সকাল থেকে সবজির হাট বসে। হাটের কারণে বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে। ভান্ডারপুর হাট ইজারাদার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যাটসহ হাটটি ৪১ লাখ টাকায় ইজারা নেওয়া হয়েছে। হাটের জায়গা রয়েছে। পাইকারী সবজি কেনাকাটা হয়। পাইকারদের ট্রাক লোড সুবিধার্থে সপ্তাহে দুদিন হাট বসে। আমরা নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কার করি।’

বদলগাছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমীন বলেন, অনেক আগে থেকে ওই দুই প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হাট বসছে বলে জেনেছি। যদি এলাকার লোকজন না চায় তাহলে হাট সরানো হবে।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নওগাঁর বদলগাছী,বিদ্যালয় মাঠে হাট,প্রাথমিকের পাঠদান ব্যাহত
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close