কুমিল্লা প্রতিনিধি
এক হাজার প্রাথমিকে নেই প্রধান শিক্ষক
কুমিল্লায় দুই হাজার ১০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এক হাজার ১৮টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। এসব বিদ্যালয়ে ৫২৪টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূণ্য রয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বাড়তি চাপ সামাল দিতে হচ্ছে শিক্ষকদের। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা হতাশায় রয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেক অভিভাবক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় দুই হাজার ১০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ লাখ ৫ হাজার ৩৩৬ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ১০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এক হাজার ১৮টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। তাই সেখানে সহকারী শিক্ষক চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। র্দীঘদিন ধরে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের পদ শূণ্য থাকায় ওইসব প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক শৃঙ্খলাও ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে মানসম্মত পাঠদানের অভাবে ভালো ফলাফল করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
মরিয়ম আক্তার, আনোয়ার হোসেন সহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, শিক্ষক স্বল্পতার কারণে নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের (সন্তানদের) ফলাফল বিপর্যয় হচ্ছে। দ্রæত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে না। বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষক দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পাঠদান কার্যক্রম চলছে কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে। অন্যদিকে অধিকাংশ উপজেলায় মহিলা শিক্ষকরা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় এবং সহকারী অনেক শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণে থাকায় চলমান সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
অভিভাবকরা আরও জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের ইচ্ছে মতো ক্লাস নিচ্ছে। কোনো বিদ্যালয়ে অফিসের কাজের পাশাপাশি এক শিক্ষককে দুটি ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। অন্যদিকে এক বা দুটি বিষয় সারাদিন পড়া নিয়ে শিক্ষার্থীরাও বিরক্ত হচ্ছে। এতে অনেক ক্ষুদে শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যেতে আগ্রহ কমছে। ওইসব বিদ্যালয় গুলোতে পরীক্ষার ফলাফল ও আশানুরূপ হচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেক অভিভাবকের।
কুমিল্লা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম জানান, প্রধান শিক্ষক সংকটের বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। আশা করি সরকার একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা দ্রুত সমাধান করবেন। সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে শিগগিরই শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। সামনে নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হলে আমরা শত ভাগ সহকারী শিক্ষক পাব। আর প্রধান শিক্ষক নিয়ে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী পদ উন্নত হবে। তবে শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
পিডিএস/এস