শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান
বান্দরবান
পিন্ডদানে শেষ হলো কঠিন চিবর দান
বান্দরবানে মহাপিন্ডদানের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকালে বান্দবানের রাজ গুরু বৌদ্ধ বিহার থেকে দেড় শতাধিক ভিক্ষু হেঁটে রাজারমাঠ, উজানীপাড়া ও মধ্যমপাড়াসহ শহরের প্রধান সড়কে পিন্ডদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, মন্ত্রীর সহধর্মিণী মে হ্লা প্রু মারমাসহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষেরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, গৌতম বুদ্ধের সময় থেকে ভিক্ষুরা সারিবেঁধে বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লা থেকে পিন্ড সংগ্রহ করেন। প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত পাহাড়ি পথের দুপাশে প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে ও দাঁড়িয়ে ভিক্ষুদের ছোয়াইং, চাল, নগদ টাকা, চীবর, মোমবাতিসহ উৎসবের নানাসামগ্রী দান করেন বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। পুণ্য লাভের আশায় ভিক্ষুদের পিন্ডদানের পাশাপাশি খাবারও দান করেন তারা। এছাড়া বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সামনে থাকা বৌদ্ধ মূর্তিকে পূজাও দেওয়া হয়।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জানান, আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাসে (উপোস) থাকার পর উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দায়ক-দায়িকারা ভিক্ষুদের সম্মানে বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করেন। এতে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে নতুন তুলা থেকে চর্কার মাধ্যমে সুতা তৈরি করে ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য কোনো সেলাই ছাড়া চীবর কাপড় বুনে দেন এ উৎসবে।
প্রায় দুই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের অনুসারী নারী বিশাখা দেবী এই কঠিন ব্রতী পালন করে বুদ্ধকে চীবর দান করেছিলেন। সে অনুসারে প্রতিবছর বান্দরবানে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারসহ পাহাড়ের অন্যান্য মন্দিরে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব ধর্মীয়ভাবে পালন করে আসছে।
পিডিএস/আরডি